হঠাৎ করেই নেত্রকোনার নির্বাচনী মাঠ ফাঁকা!


প্রকাশিত: ০৯:২০ এএম, ২০ নভেম্বর ২০১৫

নেত্রকোনায় হঠাৎ করেই পৌর নির্বাচনের মাঠ খালি হয়ে যাচ্ছে। পাড়া-মহল্লা আর ভোটারের দ্বারে দ্বারে দেখা যাচ্ছে না প্রার্থীদের। স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচনের নিয়ম পরিবর্তন হওয়ায় মাঠ-ঘাট ছেড়ে প্রার্থীরা ছুটছেন বড় নেতাদের কাছে। তাই তৃণমূলের মাঠ অনেকটা ফাঁকা থাকতে দেখা গেছে। নেত্রকোনা পৌরসভার মেয়র পদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রায় সব কজন প্রার্থীই বড় নেতাদের সান্নিধ্য পেতে অবস্থান করছেন রাজধানী ঢাকায়।

নেত্রকোনা পৌরসভার মেয়র পদের নির্বাচন আগামী ডিসেম্বর মাসে দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হবে। এমন খবর জানার পর থেকেই নেত্রকোনায় সরকারি দল আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। গত কয়েক মাস যাবতই আওয়ামী লীগ ঘরানার কয়েকজন প্রার্থী পোস্টার ব্যানার লাগিয়ে পৌরবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আসছিলেন।

বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেয়ালসহ বিভিন্ন স্থানে প্রার্থীদের রঙিন ছবিসহ পোস্টার শোভা পাচ্ছে। কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই তারা এই কাজটি যেমন করছেন তেমনি পৌর এলাকার শোভাও নষ্ট হচ্ছে বলে পরিবেশবাদীরা অভিযোগও করেছেন।

এবার নেত্রকোনা সদর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ ঘরানার অনেকেই মেয়র পদে নির্বাচনে আগ্রহী হয়ে মাঠে কাজ করছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন, বর্তমান পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রশান্ত কুমার রায়, সাবেক পৌর  মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম খান,  আওয়ামী লীগ নেতা ও নেত্রকোনা দত্ত উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি নাট্যজন হাবিবুর রহমান খান রতন, জেলা যুবলীগের যুব ও ক্রীড়া বিয়য়ক সম্পাদক ও  সাবেক ফুটবলার মাসুদ খান জনি, নেত্রকোনা সরকারি কলেজের সাবেক জি.এস এবং নেত্রকোনা জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সম্পাদক গাজী মোজাম্মেল হোসেন টুকু, পরিবেশবাদী ও নেত্রকোনা উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি খানে আলম খান, নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক মতিয়র রহমান খানের কন্যা যুব মহিলা লীগ নেত্রী ও সমাজ সেবিকা অর্পিতা খানম সুমি এবং নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি মরহুম ফজলুর রহমান খানের কন্যা চন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হাবিবা রহমান শেফালী।
 
ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকরা মেয়র পদের জন্য কাজ শুরু করলেও বিএনপি বা ২০ দলীয় জোটের সমর্থিত প্রার্থীদের তৎপরতা নেই। তারা প্রকাশ্যে নির্বাচনী তৎপরতা না চালালেও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও দলীয় হাই কমান্ডের সমর্থন লাভের জন্য গোপনে গোপনে তৎপরতা চালাচ্ছেন।

তবে বিএনপির মধ্যে যাদের কথা শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন পৌরসভার সাবেক প্যানেল  চেয়ারম্যান ও নেত্রকোনা পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল ওয়াহাব ভূঁইয়া এবং নেত্রকোনা জেলা মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নেত্রকোনা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক কমনরুম সম্পাদিকা সাবিনা দেওয়ান রনু।

আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র পদে নির্বাচনে আগ্রহীদের এখন আর মাঠে দেখা যাচ্ছে না। যেহেতু দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে সেজন্য মনোনয়ন লাভের জন্য প্রার্থীরা ঢাকায় যেমন দৌড় ঝাঁপ দিচ্ছেন, তেমনি দলীয় অফিসে এসেও লবিং গ্রুপিং করছেন মনোনয়ন পেতে।

এছাড়াও কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের আগাম তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পৌরবাসীদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলছেন। কারো কারো রঙিন পোস্টার ব্যানার শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়। মহিলা কাউন্সিলার প্রার্থীরাও ঘরে বসে নেই।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দলীয় প্রতিকে এই নির্বাচন অনেকটা সাদা মাটা হবে। কারণ নির্বাচন হয় অনেকটা উৎসব মুখোর পরিবেশে। যেহেতু বিএনপি মাঠে নেই, নির্বাচনের মাঠে থাকার পরিবেশও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না সেহেতু নির্বাচন হবে অনেকটা সাদামাটা।

কামাল হোসাইন/এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।