মিয়ানমারে বিক্ষোভ চলছেই
গেরুয়া রঙের পোশাক পরা ভিক্ষুদের নেতৃত্বে মিয়ানমারের সর্ববৃহৎ শহর ইয়াঙ্গুনে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ও অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন।
সোমবার হাজার হাজার লোক ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় জড়ো হয়েছেন। ‘স্বৈরাচারকে না বলো’ ও ‘আমরা গণতন্ত্র চাই’ লেখা খচিত ব্যানার হাতে তারা প্রতিবাদ করছেন। সু চির দল এনএলডির লাল ব্যানারের পাশাপাশি বিভিন্ন রঙের বৌদ্ধ পতাকা তারা সঙ্গে নিয়েছেন।
একটি ব্যানারে লেখা- ‘আমাদের নেতাদের মুক্তি দাও, আমাদের ভোটকে শ্রদ্ধা করো, সামরিক অভ্যুত্থান বাতিল করো।’
আন্দোলনকারীরা সোমবার সাধারণ ধর্মঘট ডেকেছেন। ‘সামরিক স্বৈরাতন্ত্রকে ছিঁড়ে ফেলতে’ তারা সরকারি কর্মচারীদের কাজ বন্ধ করতে আহ্বান জানাচ্ছেন। এই থিনজার নামে এক বিক্ষোভকারীর বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ইয়াঙ্গুন ভিত্তিক পত্রিকা মিয়ানমার নাউ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আন্দোলনকারীদের আহবানে সাড়া দিয়ে নার্স, শিক্ষক ও সরকারি চাকরিজীবীরা সোমবারের বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন।
চাকরিজীবীদের কাজ থেকে ইস্তফা শুরু হয় গত সপ্তাহ থেকে। প্রথমে শুরু করেন চিকিৎসকরা, পরে শিক্ষক ও সরকারি কর্মচারীরাও এতে যোগ দিয়েছেন। সপ্তাহের শেষে এই অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করে। ইয়াঙ্গুন, মান্ডালে, নেপিডসহ সারা দেশে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ রাস্তায় র্যালি করেছে।
২০০৭ সালে ভিক্ষুদের বিক্ষোভের পর এটিই মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় গণবিক্ষোভ। সে বছর ভিক্ষুদের কঠোরভাবে দমন করেছিল দেশটির তৎকালীন সামরিক জান্তা।
বিক্ষোভ দমনের উদ্দেশ্যে শনিবার সামরিক সরকার দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়। তবে রবিবারই সংযোগ ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় অসন্তোষ আরও বেড়ে গেছে।
এদিকে সারা বিশ্ব থেকেই সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ অং সান সু চিসহ অন্যান্য বন্দীদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। মিয়ানমারে অবরোধ আরোপের চিন্তা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুস রবিবার মধ্যরাতে টুইটে লিখেছেন, ‘মিয়ানমারের আন্দোলনকারীরা তাদের বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। আগামীকাল (সোমবার) সাধারণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। বন্দীদের মুক্ত করতে ও চিরতরে সামরিক স্বৈরতন্ত্রের অবসানে মিয়ানমার জেগে উঠেছে। আমরা তোমাদের সাথে আছি।’
এমকে/জেআইএম