জনসনের এক ডোজের ভ্যাকসিনে নতুন আশা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:২০ এএম, ৩০ জানুয়ারি ২০২১

অডিও শুনুন

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে এক ডোজের ভ্যাকসিন আনছে মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট জনসন অ্যান্ড জনসন। অন্যগুলোর তুলনায় এটি দামে যেমন সস্তা, পরিবহনও সহজ। এর জন্য কোল্ডচেইন বা অতিশীতল তাপমাত্রার প্রয়োজন পড়বে না, সাধারণ ফ্রিজের তাপমাত্রাতেই সংরক্ষণ করা যাবে মাসের পর মাস।

শুক্রবার জনসন অ্যান্ড জনসন কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে, বিশ্বব্যাপী তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে তাদের করোনা ভ্যাকসিন ৬৬ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তবে গুরুতর রোগীদের ক্ষেত্রে এর সাফল্য ৮৫ শতাংশ।

আপাতদৃষ্টিতে ফাইজার এবং মডার্নার তুলনায় জনসনের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বেশ কম মনে হচ্ছে। তারপরও এক ডোজের ভ্যাকসিনে এমন সাফল্যে সন্তুষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তাছাড়া, ভ্যাকসিনটি করোনার পুরনো ধরনের বিরুদ্ধে বেশ ভালো কাজ করেছে। শুধু পিছিয়ে পড়েছে নতুন ধরন মোকাবিলায়। একারণে অঞ্চলভেদে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার হার ভিন্ন ভিন্ন এসেছে।

জনসন অ্যান্ড জনসন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রায়ালে তাদের ভ্যাকসিন ৭২ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। ৬৬ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে লাতিন আমেরিকায় এবং দক্ষিণ আফ্রিকার এর হার ৫৭ শতাংশ।

Johnson-3.jpg

দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রায়ালে ৯৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারীই ছিলেন করোনার নতুন ধরনের শিকার। এই ধরনটিকে পুরনোটির চেয়ে বেশি সংক্রামক ও প্রাণঘাতী বলে মনে করছেন গবেষকরা।

জনসন অ্যান্ড জনসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে করোনার সবগুলো ধরনের বিরুদ্ধে গুরুতর রোগীদের ক্ষেত্রে গড়ে ৮৫ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে তাদের ভ্যাকসিন। সমযের সঙ্গে সঙ্গে এর হার বাড়তে দেখা গেছে।

ভ্যাকসিন প্রয়োগের ৪৯ দিন পর কারও শরীরে গুরুতর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। ভ্যাকসিন নেয়ার পরে যারা মারা গেছেন, তারা সাধারণ প্ল্যাসেবো গ্রুপে ছিলেন, অর্থাৎ তাদের মৃত্যুর কারণ ভ্যাকসিন নয় বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

জনসন জানিয়েছে, বিশ্বের আটটি দেশে ৪৪ হাজারেরও বেশি মানুষের ওপর পরিচালিত ট্রায়াল থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষণার এই ফলাফল এখনও কোনও পিয়ার-রিভিউ জার্নালে প্রকাশ করা হয়নি। তবে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই সেটি হতে পারে।

Johnson-3.jpg

এছাড়া, জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের কাছে আগামী সপ্তাহেই আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

জনসনের ভ্যাকসিন নিয়ে আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা অ্যান্থনি ফউসি। সিএনএন’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, একটি ভ্যাকসিন দামী নয়, একটিমাত্র ডোজ লাগে, আবার কোনও কোল্ডচেইন দরকার হয় না- সেটি অবশ্যই ভালো।

ফাইজার-মডার্নার ভ্যাকসিনের চেয়ে কার্যকারিতা কম থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনসনের যদি ফাইজার-মডার্নার ভ্যাকসিনের ৯৪-৯৫ শতাংশ কার্যকারিতার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে না হতো, তাহলে হয়তো বিষয়টি এতটা খারাপ দেখাত না।

ডা. ফউসি বলেন, সমস্যাটা কোথায় জানেন? যদি এটি এমন সময় বের হতো যেখানে মডার্নার ৯৪-৯৫ শতাংশ নেই… আমরা হয়তো বলতাম ‘ওয়াও’। ৭২ শতাংশ কার্যকর, গুরুতর রোগে যার সাফল্য আরও বেশি, সেটা সত্যিই অসাধারণ। কিন্তু এখন আমরা সারাক্ষণ ৯৪-৯৫ শতাংশের সঙ্গে তুলনা করছি।

মার্কিন প্রশাসনের এ উপদেষ্টার মতে, বিশ্বজুড়ে মানুষদের হাসপাতাল থেকে দূরে রাখতে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জনসনের ভ্যাকসিন ভালো ফল দিতে পারে।

কেএএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।