ফরিদপুরে চম্পা হত্যা মামলায় ৪ জনের ফাঁসি
ফরিদপুরে জাকিয়া সুলতানা চম্পা হত্যা মামলায় চারজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল-৪ এর বিচারক আব্দুর রহমান সরদার এ রায় দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- শামীম মন্ডল, রাজীব হোসেন বাবু, জাহিদুল ইসলাম এবং আকাশ মন্ডল। খালাস পেয়েছেন মামলার অপর আসামি মৌসুমী বেগম। এছাড়াও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর চাচাতো বোন পপির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা চম্পা। কিন্তু ধর্ষকদের নির্মমতায় ফিকে হয়ে যায় গায়ে হলুদের সব আনন্দ। ১৩ ডিসেম্বর বাড়ির পাশের একটি মেহগনি বাগান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় চম্পার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণ শেষে হত্যার আলামত পায়। এ ঘটনায় চম্পার ভাই হাসিবুল ইসলাম বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশের এসআই শাহ আলম ২০১৩ সালে ২০ মে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে ধর্ষণের পর হত্যা মর্মে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এর প্রেক্ষাপটে ২০১৪ সালের ৯ জুন ফরিদপুরের চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে এটিকে বিবেচনা করে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ স্থানান্তর করা হয়।
মামলার দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার ঢাকার ৪ নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রহমান অভিযুক্ত ৪ জনের ফাঁসির দণ্ড দেন। রায় ঘোষণার সময় মামলার প্রধান আসামি শামিম মন্ডল ও জাহিদ সর্দার কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অন্য দুই আসামি পলাতক রয়েছেন।
চম্পার ছোট চাচা আলমগীর শেখ জানান, এতিম ভাজতিকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল তাদের আজ বিচার হয়েছে। আমরা এই রায়ে খুশি। তবে উচ্চ আদালতে যেন এই রায় বহাল রেখে দ্রুত তাদের ফাঁসি যেন কার্যকর হয় সেই দাবি করেন তিনি।
এদিকে পুটদে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুল শিক্ষিকা শিউলী বেগম জানায়, মেধাবী ছাত্রী চম্পা হত্যার বিচার হয়েছে। চম্পার নির্মম হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আজ হয়েছে বলে আমরাও খুশি। এই রায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে আমরা মনে করি।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি মাহফুজুর রহমান জানান, চম্পা হত্যা মামলার পাঁচজন আসামির মধ্যে চারজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। অন্যজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এসএম তরুন/এসএস/এমএস