সাভারে আ. লীগের মনোনয়ন লড়াই : মাঠছাড়া বিএনপি
রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে পৌর নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণা এখন তুঙ্গে। ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো পৌর এলাকা। প্রচারণার দিক দিয়ে এগিয়ে ক্ষমতাশীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরাই। দলের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ে শোডাউনের পাশাপাশি চলছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মন জয়ের প্রতিযোগিতা। অন্যদিকে একেবারেই প্রচারণা নেই বিএনপি দলীয় কোনো মেয়র প্রার্থীর। সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ জেলে কেউবা গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা ছাড়া। এদিকে প্রচারণায় পিছিয়ে রয়েছে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরাও।
সরেজমিনে সাভার পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ক্ষমতাশীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরাই প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছে। সড়কের মোড়ে মোড়ে স্থান করে নিয়েছে তাদের ব্যানার ফেস্টুন। পছন্দের নেতাকে মেয়র হিসেবে দেখতে চেয়ে দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগিয়েছেন দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতারাও।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগের ব্যনারে মেয়র পদে প্রচারণায় নেমেছেন সাভার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আব্দুল গনি, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সাংসদ আশরাফ উদ্দিন খাঁন ইমু, যুবলীগ নেতা জিএস মিজানুর রহমান মিজান। তবে এদের মধ্যে প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আলহাজ আব্দুল গনি। সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড, বিভিন্ন সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তার ব্যানার ও ফেস্টুনের আধিপত্যই বেশি। ইতোমধ্যে সমর্থকদের নিয়ে একটি বিশাল শোডাউনও করেছেন তিনি। আলহাজ আব্দুল গনি এর আগে সাভার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। গত নির্বাচনে তিনি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশ নেননি।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী এবার দলীয় ব্যানারে অনুষ্ঠিত হবে পৌর নির্বাচন। এজন্য প্রথমে দলের মনোনয়ন পাওয়াটাই প্রধান বিষয়। এদিক থেকে বিবেচনা করলে সাবেক সাংসদ আশরাফ উদ্দিন খাঁন ইমুকেই এগিয়ে রাখছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা। যদিও এখনও পৌরসভার কোনো এলাকাতেই ইমুর কোনো ব্যানার ফেস্টুন চোখে পড়ছে না।
ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী জিএস মিজানুর রহমান মিজান। তিনি নিজেকে ঘোষণা দিয়েছেন নতুন প্রজন্মের মেয়র প্রার্থী হিসেবে। তবে দলের মনোয়ন পাওয়ার ব্যাপারে মূল লড়াইটি আব্দুল গনি ও আশরাফ উদ্দিন খাঁন ইমুর মধ্যেই হবে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ নেতারা।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ ফিরোজ কবীর এ প্রতিবেদককে জানান, আব্দুল গনির চেয়ে আশরাফ উদ্দিন খাঁন ইমুর দলের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন নেতা তিনি। তার ব্যক্তিত্বও উজ্জ্বল। অন্যদিকে আব্দুল গনির বিরুদ্ধে সুবিধাবাদী রাজনীতি করার অভিযোগ রয়েছে। আগের সাংসদ মুরাদ জং এর সঙ্গে তার সখ্যতা ছিল প্রবল। ক্ষমতার পালা বদলের সঙ্গে সঙ্গে তিনি বর্তমান সাংসদ এনামুল রহমানের পালে ভিড়েছেন। তার মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েও এক ধরনের সন্দেহ আছে এলাকায়।
অন্যদিকে একবারেই প্রচারণায় নেই বিএনপি দলীয় কোনো সম্ভাব্য প্রার্থী। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আদৌ বিএনপি পৌর নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে কিনা তারও কোনো উত্তর মেলেনি এখনও। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন বর্তমান মেয়র আলহাজ রেফাত উল্লাহ ও ঢাকা জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি কাউন্সিলর খোরশেদ আলম। এদের মধ্যে রেফাত উল্লাহ রয়েছেন জেলে আর গ্রেফতার এড়ানোর ভয়ে দীর্ঘদিন এলাকার বাইরে রয়েছেন খোরশেদ আলম।
এসএস/এমএস