যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিন না নেয়ায় ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা!
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারির তাণ্ডবে চিকিৎসা ব্যবস্থা যখন বিপর্যস্ত, তখন ইরানের স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট দু’টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্লেষকদের মতে, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিন নিষিদ্ধ করে তাদের শত্রুভাবাপন্ন কিউবার ভ্যাকসিনের দিকে হাত বাড়ানোয় ক্ষিপ্ত হয়ে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন।
গত ৮ জানুয়ারি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে করোনা ভ্যাকসিন আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। টেলিভিশনের এক ভাষণে তিনি বলেন, ওই দুই পশ্চিমা শক্তির ভ্যাকসিনগুলোতে তার আস্থা নেই। কারণ বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ মৃত্যুর হার সেখানেই।
খামেনির দাবি, মার্কিনিরা কার্যকর ভ্যাকসিন বানাতে পারলে নিজেদের দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ব্যর্থ হতো না। করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন চার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
একই কথা যুক্তরাজ্যের জন্য প্রযোজ্য মন্তব্য করে ইরানের এই ধর্মীয় নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ভ্যাকসিনের প্রতি তার আস্থা নেই, কারণ তারা ভ্যাকসিনগুলোর পরীক্ষা অন্য জাতির ওপর করেছে।
এরপরেই কিউবার সবচেয়ে অগ্রগামী ভ্যাকসিনপ্রযুক্তি পেতে চুক্তিবদ্ধ হয় ইরান। কিউবার জানিয়েছে, তাদের ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল হবে ইরানে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত এর কারণেই ক্ষুব্ধ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা তার ঘোষণার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্র যুক্তরাজ্যের তৈরি ভ্যাকসিনগুলোর গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। একারণে প্রতিশোধ হিসেবে ইরানে ভ্যাকসিন তৈরির সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
গত বুধবার ইরানের দু’টি ফাউন্ডেশন এবং তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়। নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে ফাউন্ডেশন দুটির নেতা এবং তাদের সহযোগীদের সম্পদ জব্দ হবে এবং যারা এসব ফাউন্ডেশনের সঙ্গে লেনদেন করবে, তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে।
সমালোচকদের মতে, গত কয়েক বছরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে যেসব নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, সেখানে মানবিক বিষয়গুলোর প্রতি কোনো ধরনের ভ্রুক্ষেপ করা হয়নি। এবারও তিনি এমন দু’টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, যারা করোনার ভ্যাকসিন তৈরি ও গবেষণা কাজে নিয়োজিত।
এনবিআর টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক জ্যাকি নোরতান বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ইরানের অর্থনীতির ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি দেশটির স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
সূত্র: পার্স টুডে, আল জাজিরা
কেএএ/জিকেএস