জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তরের বিষয়ে রায় আজ
উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে কিনা সে বিষয়ে ব্রিটেনের একটি আদালত সোমবার (৪ জানুয়ারি) রায় দিতে যাচ্ছেন। লক্ষাধিক গোপন নথি অনলাইনে ফাঁস করে দেয়ায় গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বর্তমানে ব্রিটেনে বন্দী আছেন অ্যাসাঞ্জ।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, জেলা জজ ভেনেসা ব্যারাইস্টার সোমবার সকাল ১০টায় ওল্ড বেইলি আদালতে আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষনা করবেন। ৪৯ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ১৮টি অভিযোগ রয়েছে। আফগানিস্তান ও ইরাকে মার্কিন হামলার বিস্তারিত তথ্যের পাঁচ লাখ ফাইল প্রকাশ করায় তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলো আনা হয়।
অস্ট্রেলীয় এই প্রকাশককে ঘিরে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা আন্তর্জাতিক আইনি বিতর্কের পর অবশেষে হস্তান্তরের শুনানি হতে যাচ্ছে। সোমবার আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কোনো সম্ভাব্য হস্তান্তরের আগে ব্রিটেনে আইনি প্রক্রিয়াগুলো অব্যাহত থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রে দোষী সাব্যস্ত হলে অ্যাসাঞ্জকে ১৭৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেয়া হতে পারে। ব্রিটেনের রায়ের আগে জার্মানি ও জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে মানবাধিকার ও মানবিক সমস্যাগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
দক্ষিণপূর্ব লন্ডনের একটি উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন কারাগারে অ্যাসাঞ্জ বন্দী রয়েছেন। সেখানে কয়েকজন বন্দীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। অ্যাসাঞ্জ শ্বাসঃপ্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগছেন, তাই করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ঝুঁকি তার আরও বেশি।
উইকিলিকসের প্রধান সম্পাদক ক্রিস্টিন র্যানসন রোববার এএফপিকে বলেন, তিনি প্রায় নিশ্চিত যে আদালত অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে রায় দেবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিচার প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্ব দেখেছি। প্রক্রিয়ায় জুলিয়ানের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম হয়েছে। তাই দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি প্রায় নিশ্চিত যে আগামীকালের সিদ্ধান্তে তাকে হস্তান্তরের কথা বলা হবে।’
অ্যাসাঞ্জকে ক্ষমা করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের নির্যাতন বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি নিলস মেলজার। গত ডিসেম্বরে তিনি লেখেন, ‘জনাব অ্যাসাঞ্জকে ক্ষমার মাধ্যমে, জনাব প্রেসিডেন্ট, আপনি আমেরিকা ও বিশ্বের জনগণের কাছে মানবিকতা, সত্য ও ন্যায়ের বার্তা পাঠান।’
গতবছর ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটেনের শুনানিতে বলা হয়, অ্যাসাঞ্জ যদি স্বাক্ষ্য দেন ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির (ডিএনসি) কম্পিউটার সার্ভার রাশিয়া হ্যাক করেছিল তাহলে ট্রাম্প তাকে ক্ষমা করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ওই নির্বাচনের সময় উইকিলিকস ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল ফাঁস করে দেয় যা ট্রাম্পের জন্য সুবিধা বয়ে আনে।
এমকে/জেআইএম