অযোধ্যা মসজিদের নকশা প্রকাশ, নির্মাণশৈলীতে পাশ্চাত্যের ছোঁয়া
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কর্মীরা। এ ঘটনার জেরে ভারতজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। যাতে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।
দীর্ঘ প্রায় ২৭ বছর পর ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বাবরি মসজিদ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে অযোধ্যার বিতর্কিত স্থানে রামমন্দির নির্মাণের আদেশ দেন বিচারক। একই সঙ্গে অযোধ্যাতেই বিকল্প কোন স্থানে মুসলিমদের জন্য মসজিদ নির্মাণে ট্রাস্ট গঠন করে দেয়া হয়।
রায়ে সন্তুষ্ট না হলেও বিক্ষোভ বা সহিংস কর্মসূচিতে যাননি দেশটির ইসলামিক নেতারা। তবে রায় ঘিরে ভারতজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়। এর মধ্যেই গত ৫ আগস্ট করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিস্থাপন করেন।
এবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী অযোধ্যার ধানিপুরে পাঁচ একর জমির উপর মসজিদ নির্মাণের ব্লু-প্রিন্ট প্রকাশ করেছে ট্রাস্ট। নকশা অনুযায়ী মসজিদের সাথে একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। থাকবে একটি গ্রন্থাগার ও কমিউনিটি কিচেন।
প্রকাশিত নকশা অনুযায়ী- মসজিদটির মাথায় বিশাল একটি গম্বুজ থাকলেও পাশ্চাত্য ধাঁচের নির্মাণশৈলী স্পষ্ট। মূল ভবনটিও আধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শন। মসজিদের সঙ্গে থাকছে পার্কিং ব্যবস্থা।
দেশটির সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড দ্বারা গঠিত ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন (আইআইসিএফ) অযোধ্যায় মসজিদটি তৈরির দায়িত্বে রয়েছেন। প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা স্থপতি অধ্যাপক এসএম আখতার বলেন, পুরো মসজিদটি সৌরশক্তিচালিত হবে। ভিতরের তাপমাত্রা বাড়ানো-কমানোর স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থাকবে। মসজিদের সাথেই থাকবে ৩০০ বেডের হাসপাতাল। এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের আনা হবে।
আগামী ২৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করা হবে। তবে এখনও মসজিদটির কোনো নামকরণ করা হয়নি। আইআইসিএফ নিশ্চিত করেছে, কোনো রাজা-বাদশার নামে এটির নামকরণ করা হবে না।
প্রকল্পের পরামর্শদাতা অধ্যাপক পুস্পেশ পান্ত বলছেন, সেখানে একটি জাদুঘর বা সংরক্ষণাগার থাকা জরুরি। যেখানে একজন কিউরেটর দায়িত্বে থাকবেন এবং ভারতের মুসলিম ঐতিহ্য এবং সংগ্রামের চিত্র সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।
সূত্র: এনডিটিভি
এএএইচ/এমএস