রিফাতের নেতৃত্বে ভিভিআইপিদের উপর হামলার পরিকল্পনা ছিল জেএমবি’র


প্রকাশিত: ১০:১০ এএম, ১০ নভেম্বর ২০১৫

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) ও মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম বলেছেন,  নিষিদ্ধ ঘোষিত জামাআতুল মুজাহিদীন (জেএমবি) এর একটি অংশ আরিফ ইবনে খায়ের ওরফে রিফাতের নের্তৃত্বে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। গ্রুপটি অনেক দিন ধরে নানা অপরাধকর্ম চালিয়ে আসছিল। রাষ্ট্রের ভিভিআইপি, ভিআইপিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা করার পরিকল্পনা করছিল তারা।
 
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
 
এর আগে সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন এলাকায় অভিযান চালিযে বিপুল পরিমাণ জিহাদি বই, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্রসহ জেএমবি’র ১১ সদস্য গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
 
পুলিশ সদর দফতরের এলআইসি শাখা ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) বিভাগের যৌথ অভিযানে আটককৃত জেএমবি সদস্যরা হলেন, আরিফ ইবনে খায়ের ওরফে রিফাত, মো. বাবু মুন্সি ওরফে মাসুদ রানা, খোরশেদ আলম, ওমর ফারুক, আলহাজ মিয়া, হেলাল উদ্দিন, আব্দুল বাছেদ, মো. সুজাত, আজাহার আলী, ফরহাদ হোসেন ও মিজানুর রহমান।
 
তিনি বলেন, তাদের পরিকল্পনায় ছিল ডাকাতি ও ছিনতাই। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম অঞ্চলের কোনো একটি এনজিও বা ব্যাংকের কোনো শাখায় হামলা চালিয়ে নগদ অর্থ লুট করা। কিন্তু পুলিশ নজরদারির কারণে তা সম্ভব হয়নি।
 
মনিরুল ইসলাম বলেন, জেএমবি’র একটি অংশ ইতোপূর্বে কয়েকটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছে বলে গ্রেফতারকৃতরা স্বীকারও করেছে। তবে পুলিশি তৎপরতার কারণে করতে পারেনি তাও স্বীকার করেছে তারা।
 
মনিরুল ইসলাম বলেন, মাওলানা সাইদুর রহমান যিনি এখন জেলে আছেন তাদের একাংশের নেতা। জেএমবির এই অংশটির কিছু নেতা-কর্মী তাদের প্রচার প্রসারের জন্য কাজ করে থাকে।
 
গ্রুপটির অপর একটি অংশ পুরোপুরি ডাকাতি, ছিনতাইসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থায়ন করা। সংগৃহীত অর্থ থেকে তাদের অনেকে নিজেরাও ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন।
 
অর্থের বিনিময়ে আটককৃতরা যেকোনো ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড করতে রাজি। তাদের কাছে বেশ কিছু উগ্রবাদী বই পুস্তক পাওয়া গেছে।
 
ইতোপূর্বে গত ২৭ জুলাই ডিবি পুলিশ জেএমবি’র ভারপ্রাপ্ত আমির আবু তালহা মোহাম্মদ ফাহিম ওরফে পাখিকে গ্রেফতার করা হয়। আমির আবু তালহা তার অন্যতম সহযোগী হিসাবে আরেক শীর্ষ স্থানীয় নেতা আরিফ ইবনে খায়ের ওরফে রিফাত এর নাম প্রকাশ করে।
 
আবু তালহা গ্রেফতার হওয়ায় পরবর্তী সময়ে তার অন্যতম সহযোগী রিফাত গাজীপুর, টাংগাইল ও জামালপুর-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে সদস্য সংগ্রহপূর্বক সংগঠনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। তারই পৃষ্ঠপোষকতায় ও নেতৃত্বে উক্ত জেএমবি’র সদস্যরা ঢাকায় একত্রিত হয়।
 
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, রাষ্ট্রের ভিভিআইপি, ভিআইপিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা করার পরিকল্পনা করছিল তারা।
 
তিনি বলেন, মাওলানা সাইদুর রহমানের ছেলে সায়েম ওরফে সায়েমকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে প্রথম রিফাতের নাম উঠে আসে। সায়েমের ভাষ্য- তিনি ভাল হয়ে চলার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু রিফাত আবারো তাকে এই পথে টেনে নেয়। সায়েমকে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।
 
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন জানানো হবে। কিছু আন-ডিটেকটিভ কেইস এ সংশ্লিষ্টতা তাদের রয়েছে কিনা তা জানার চেষ্টা করা হবে।

জেইউ/এসএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।