মিয়ানমারে আবারও জয় পেল সু চির দল
অডিও শুনুন
মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে আবারও জয় পেল অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। নির্বাচনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, পরবর্তী সরকার গঠনের জন্য অধিকাংশ আসনেই জয়লাভ করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। তবে এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।
দেশটিতে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ৩২২টি আসন। কিন্তু এনএলডি ৩৪৬টি আসনে জয়লাভ করেছে। ২০১১ সালে দেশটিতে সেনাশাসনের অবসান ঘটে এবং গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। এরপর দ্বিতীয়বারের মতো দেশটিতে রোববার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোট শেষের পর বেসরকারি ফলাফলে এনএলডি এগিয়ে রয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো আভাস দিতে শুরু করে।
মিয়ানমারের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ৪২৫ ও উচ্চকক্ষে ১৬১ আসন রয়েছে। ৫০ বছরের বেশি সময়ের সেনাশাসনের কবল থেকে মুক্ত হয়ে ২০১৫ সালে দেশটিতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে সু চির দল ভূমিধস জয় পায়। সে বছর দলটি সংসদের মোট ৩৯০ আসনে বিজয়ী হয়। তবে এবার বেশ কিছু আসন হারাতে হয়েছে তাদের।
এদিকে, সেনা-সমর্থিত বিরোধী দল পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। তবে ভোট গণনা এখনও শেষ হয়নি। এখনও ৬৪ আসনের ফল ঘোষণা হয়নি। বিদেশি নাগরিকের সঙ্গে বিয়ে হওয়ায় ২০১৫ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েও দেশটির প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি সু চি। একই কারণে এবারও তিনি জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। বর্তমানে এই নেত্রী ‘স্টেট কাউন্সিলর’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের বেশ কিছু পুলিশ ও সেনা পোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। সে সময় মিয়ানমার সেনাদের নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালাতে বাধ্য হয়।
রোঙ্গিাদের ওপর দমন-পীড়নের ঘটনায় চুপ থেকেছেন সু চি। এমনকি সে সময় তাকে সেনাবাহিনীর আদলেই কথা বলতে দেখা গেছে। ফলে বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয়েছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী এই নেত্রী। বিভিন্ন দেশ তাকে প্রদান করা বেশ কিছু সম্মান ও উপাধিও তুলে নিয়েছে।
এবার মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মতো বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ভোটাধিকার প্রয়োগ বা প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাননি। বেশ কয়েকটি বিদ্বেষপূর্ণ স্থানে ভোট প্রদানের কোনো ব্যবস্থা করেনি দেশটির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীদের এই নির্বাচনের বাইরে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে রোহিঙ্গারাও রয়েছেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের নির্বাচনের পাশাপাশি একই সঙ্গে দেশটিতে রাজ্য এবং আঞ্চলিক পর্যায়েও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আঞ্চলিক নির্বাচনে প্রাদেশিক পর্যায়ে এক-তৃতীয়াংশ আসন নির্ধারিত থাকে সামরিক বাহিনীর জন্য। নির্বাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যরা পরবর্তীতে দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং দুইজন ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।
টিটিএন