ঈশ্বরদী পৌরসভা নির্বাচন : আ.লীগ প্রার্থীরা তৎপর


প্রকাশিত: ০৮:৩৪ এএম, ০৬ নভেম্বর ২০১৫

ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঈশ্বরদী পৌরসভার নির্বাচন। আসছে ১২ জানুয়ারি এই পৌরসভার মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

তারা এলাকায় জনসংযোগ করছেন। দেখা-সাক্ষাৎ, অনুষ্ঠানাদিতে অংশগ্রহণ, স্থানীয় সংবাদপত্রে শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপন ইত্যাদির মাধ্যমে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছেন।

দলীয় সমর্থনে একাধিকবার প্রার্থী ছিলেন বর্তমান পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মিন্টু। তিনি ইতোমধ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ডে উঠান-বৈঠকের মাধ্যমে কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে কথাবার্তা বলছেন। তার সমর্থকরা দৃঢ়ভাবেই বলছেন এবার পৌর নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা হবে না। গত ৩ অক্টোবর পৌর আওয়ামী লীগের এক সভায় মিন্টুকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

গত ১০ অক্টোবর স্থানীয় প্রগতি রেঁস্তোরায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে আবুল কালাম আজাদ মিন্টু পৗের এলাকা নিয়ে তার পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। হজ পালন শেষে গত ১৬ অক্টোবর স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে এসে ভূমিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুর রহমান শরিফ বলেন, যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে সেহেতু প্রার্থীর বিষয়টি জেলা কমিটি হয়ে কেন্দ্র পর্যন্ত যাবে।

পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান মেয়র মোকলেছুর রহমান বাবলু পুনরায় প্রার্থী হচ্ছেন এ কথা তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছ থেকে জানা গেছে। গতবার পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু দলের সমর্থনে প্রার্থী হলেও বাবলু নির্বাচনে জয়লাভ করেন।

নানাবিধ মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে থাকায় এবার জাকারিয়া পিন্টু নির্বাচনে প্রার্থী না হবার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে তার সমর্থকরা দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোট প্রয়োগ করবেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। গতবার ভোটার সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজার ৯৪৩ জন। মেয়াদ উত্তীর্ণের এক বছর ৩ মাস পাঁচ দিন পর ১২ জানুয়ারি’১১ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ঈশ্বরদী পৌরসভার।

এদিকে পৌর ছাত্রদলের সভাপতি ইমরুল কায়েস সুমন দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। তিনিও এলাকার ভোটারদের মধ্যে জনসংযোগ করছেন।

ঈশ্বরদীতে বিএনপির আভ্যন্তরীণ কোন্দল দীর্ঘ দিনের। এই দলের সাধারণ কর্মীদের ধারণা বিগত তিন টার্ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থীর পরাজয়ের প্রধান কারণই হলো দলীয় কোন্দল। তারা মনে করেন, ঈশ্বরদী উপজেলায় বিএনপি-জামায়াত ঘরানার ভোট বেশি। গত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির দুজন প্রার্থী থাকার পরও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু ৪২ হাজার ভোটের মধ্যে শুধু পৌর এলাকা থেকেই পেয়েছেন ১২ হাজার ভোট।

এবারের পৌর নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে আরো পাঁচ হাজার ভোট যোগ করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবেন। আর আওয়ামী লীগ প্রার্থী এই ১২ হাজারে বিভক্তি আনতে কাজ করছেন। অন্যান্য সময়ের তুলনায় এবার কাউন্সিলর প্রার্থীদের সংখ্যা বেশি হবে বলে মনে হচ্ছে। তাদের অনেকেই এখন অনেক রাত পর্যন্ত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন।

ঈশ্বরদী পৌরসভায় নির্বাচিত প্রতিনিধি অনেকেই বসেছেন কিন্তু এ যাবৎ একটি গণপাঠাগার নির্মাণের উদ্যোগ কেউ নেননি। পৌর সুপার মার্কেটের পেছনে অবস্থিত টাউন হলটি (বর্তমানে সিনেমা হল) ভেঙে দিয়ে সেখানে সুন্দর একটি ডিজাইন করে বহুতল ভবন নির্মাণ করে নীচের তলায় মার্কেট এবং দ্বিতীয় তলায় অডিটরিয়াম ও তৃতীয় তলায় পাবলিক লাইব্রেরি অনায়াসে ও সুন্দরভাবে হতে পারে। এ দাবি সচেতন নাগরিকদের।

এবারের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। পৌরবাসী নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন। পৌর এলাকার রাস্তাঘাটের দূরাবস্থাসহ বিভিন্ন সমস্যায় সাধারণ মানুষ নাজেহাল।

অন্যদিকে নাগরিকদের আধুনিক মনমানসিকতায় গড়ে তুলতে হলে একটি পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা সর্বস্তরের মানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। শিশুপার্ক নির্মাণ, মাহবুব আহমেদ খান স্মৃতি মঞ্চ উন্নয়ন, সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত শহর গড়ার প্রতিশ্রুতিতো সব প্রার্থীরই থাকে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পরে আর কাজ হয় না।

আলাউদ্দিন আহমেদ/এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।