৬শ বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে পেরেছে বাংলাদেশি এই কিশোরী
বিশ্বের অনেক দেশেই বাল্যবিয়ে এখনও ঠেকানো যাচ্ছে না। বেশ কিছু দেশেই মেয়েদের অনেক কম বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। ফলে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই সংসারের সব দায়-দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয় তাদের।
বাংলাদেশেও বাল্যবিয়ের হার বেশ আশঙ্কাজনক। শিশু অধিকার কর্মী ও আইনজীবীদের মতে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ের হার বাংলাদেশেই। দেশটিতে অর্ধেকের বেশি মেয়েরই ১৮ বছর বয়সের আগেই বিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ১৫ হওয়ার আগেই প্রায় ১৮ শতাংশ মেয়ে শিশুর বিয়ে হয়।
মানবাধিকার সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বলছে, অনেক কম বয়সে কোনো মেয়ের বিয়ে হওয়াটা তার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি তাদের শিক্ষাগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয় এবং তাদের বাকি জীবন অভাব-অনটনে কাটানোর সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।
দোলা আক্তার নামে বাংলাদেশের এক কিশোরী মেয়েদের বাল্যবিয়ের পক্ষে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি এবং তার সহকর্মীরা মিলে গত দুই বছরে এই দেশের ছয় শতাধিক বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন।
দোলা জানিয়েছেন, তার বয়স যখন মাত্র ১২ তখন আশপাশের অনেকেই তার মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসতেন। তিনি বলেন, তার নিজের মায়েরও মাত্র ১৩ বছর বয়সে তার চেয়ে ৮ বছরের বড় একজনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে।
বর্তমানে দোলার বয়স ১৬ বছর। শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা আইনজীবীদের সঙ্গে অনেক তরুণ কর্মী এখন কাজ করছেন। দোলাও তাদেরই একজন। অল্প বয়সে সন্তানদের বিয়ে দিলে কি কি সমস্যা হতে পারে সে বিষয়ে বাবা-মায়েদের জানান তারা।
দোলার বয়স যখন মাত্র ১০ তখন তিনি ওয়ার্ল্ড ভিশনে যোগ দেন। এর মধ্যেই তিনি বেশকিছু প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। গত বছর তিনি জেনেভায় জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে যোগ দেন। সেখানে তিনি তার দেশের মেয়েদের সমস্যা এবং বিভিন্ন কার্যক্রমে তার সফলতার কথা তুলে ধরেন।
বাল্যবিয়ে শুধু বাংলাদেশেই সমস্যা নয়। বরং এটি বিশ্বব্যাপী অনেক দেশেই একটি প্রধান সমস্যা। বিশ্বে গড়ে প্রতি মিনিটে ১৮ বছরের কম বয়সী ২৩ জন মেয়ের বিয়ে হচ্ছে।
টিটিএন/এমকেএইচ