নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালে পরাজিত যুক্তরাষ্ট্র : ইরান
তেহরানের বিরুদ্ধে পুনরায় জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র পরাজিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া একটি প্রস্তাবের আওতায় ইরানের বিরুদ্ধে পূর্বের সব নিষেধাজ্ঞা বহালের ঘোষণা দেন শনিবার। এই নিষেধাজ্ঞা বহালের বিরোধিতা করলে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোকে পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও হুমকি দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় রোববার টেলিভিশনে ভাষণ দেন রুহানি। এ সময় তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপে নিশ্চিত পরাজিত হতে যাচ্ছে আমেরিকা। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া এবং পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছে।
রুহানি বলেন, আমরা কখনই যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখোমুখি হবো না। আমেরিকার হয়রানির কঠোর জবাব দেবে ইরান। এদিকে, তেহরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ঘোষণার পর মার্কিন ডলারের তুলনায় রেকর্ড পতন হয়েছে ইরানি রিয়ালের।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপকে অন্তঃসারশূন্য এবং বেআইনি বলে উড়িয়ে দিয়েছে ইরান। শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণার ব্যাপারে তিনি কোনও পদক্ষেপ নিতে পারেন না। কারণ এই বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।
২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ২০১৮ সালে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে গিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়।
চুক্তির তিন ইউরোপীয় অংশীদার ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং জার্মানি রোববার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, পুনরায় জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপে যেকোনও ধরনের পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আইনি সক্ষমতা নেই। কারণ ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে বেরিয়ে গেছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রচেষ্টাকে ‘ব্যর্থ’ বলে অভিহিত করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি। জাতিসংঘ ও নিরাপত্তা পরিষদের জন্যও এটি হুমকি।
সূত্র: রয়টার্স।
এসআইএস/এমকেএইচ