অর্ধশতাধিক দর্শনার্থী নিয়ে রোগী দেখতে গেলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী


প্রকাশিত: ০৩:৫৭ পিএম, ০২ নভেম্বর ২০১৫

‘প্লিজ, ভাইয়েরা নীচে নেমে দাঁড়ান। বেডের স্ট্যান্ড ভেঙে রোগীর মাথায় পড়বে’। একজন উদ্বিগ্ন তরুণ চিকিৎসক এটা বলে চেঁচিয়ে উঠলেন। কিন্তু কে শুনে কার কথা। বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার রিপোর্টার, ফটোসাংবাদিক ও ভিডিওগ্রাফারদের সকলেই তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও তার সভাসদদের নিয়ে ব্যস্ত।

কেউ বিছানার পাশে, কেউ বেড স্ট্যান্ড ধরে কেউ চেয়ার টেনে আবার কেউবা অদূরে শূূন্য বিছানায় লাফ দিয়ে উঠে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আহতকে দেখার দৃশ্য ধারণ করছিলেন। ফলে চিকিৎসকের ডাক তাদের কানেও পৌঁছালো না। কারণ ওই সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অর্ধশতাধিক লোকবল। আর এতে স্ট্যান্ড ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় রোগীর স্বজনরা হতবাক হয়ে শুধু তাকিয়ে রইলেন।

এমনই এক দৃশ্যের অবতারণা হয় সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ১৬, ১৭ ও ৪৮ নম্বর কেবিনে।

দুদিন আগে রাজধানীর লালমাটিয়ায় সন্ত্রাসীদের গুলি ও চাপাতির কোপে আহত শুদ্ধস্বরের প্রকাশক আহমেদুর রশিদ চৌধুরী টুটুল, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ও লেখক তারিক রহিম এবং কবি ও লেখক সুদীপ কুমার বর্মন (রনদীপন বসু)-কে হাসপাতালে সোমবার দুপুরে দেখতে যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

Health-Minister

এ সময় তার সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মো.নুরুল হক, ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান, বিএমএ ও স্বাচিপ মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান ও অন্যান্য বিএমএ, স্বাচিপ চিকিৎসক এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও অনলাইনের সংবাদকর্মীসহ অর্ধশতাধিক দর্শনার্থী ছিলেন।

হাসপাতালজনিত সংক্রমণরোধে গত দুদিন চিকিৎসকরা গুলিবিদ্ধ ও চাপাতির কোপে আহতদের কক্ষে পারতপক্ষে কাউকে প্রবেশ করতে না দিলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী দলবল নিয়ে তিন আহত ব্যক্তির কক্ষে ঢুকে পড়েন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সিনিয়র চিকিৎসক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এভাবে সদলবলে রোগী দেখতে আসার রীতির পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। আমরা চিকিৎসকরা সর্বদা  হসপিটাল অ্যাকুয়ারড ইনফেকশনের ব্যাপারে বলে থাকি। অথচ আমাদের চিকিৎসকরাই আজ মন্ত্রীর সঙ্গে কক্ষে ঢুকেছে যা মোটেই উচিত হয়নি। এভাবে রোগীর কক্ষে অবাধ প্রবেশের ফলে রোগীর হাসপাতালে বেশি দিন থাকতে হতে পারে বলে তারা মন্তব্য করেন।

Minister

চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, আহত তিনজনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।  তারেক রহিমের পেটে গুলি থাকলেও আপাতত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই। তার ভাই আদেল রহিম সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন। অন্য দুজনের অবস্থা তার চেয়ে ভালো।

ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান বলেন, তারেক রহিমের পেটের গুলি যখনই সমস্যা করবে তখনই অস্ত্রোপচার করা হবে।

এমইউ/একে/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।