বাংলাদেশি চোর চক্রে নাজেহাল ভারতের পুলিশ
বাংলাদেশের ২০ সদস্যের একটি চোরচক্রের কর্মকাণ্ডে নাজেহাল হয়ে পড়েছে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের পুলিশ। শুধু অন্ধ্রপ্রদেশ নয় দেশটির তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক ও তামিলনাডু রাজ্যে এই চক্রের সদস্যরা সক্রিয়। পুলিশের হাতে বেশ কয়েকজন আটক হলেও কৌশলে পালিয়ে যায় এ চক্রের সদস্যরা। সোমবার ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য হিন্দু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবরে বিশাখাপত্তম পুলিশ নিয়মিত টহলের এই চক্রের কয়েকজন সদস্যকে আটক করে। এরপর তাদের কাছ থেকে আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করে পুলিশ। চলতি বছরের আগস্টে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়াওয়াদায় একটি চুরির ঘটনায় সেন্ট্রাল ক্রাইম স্টেশন (সিসিএস) যেসব আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করেছিল তার সঙ্গে এই চক্রের সদস্যদের আঙ্গুলে ছাপ হুবহু মিলে যায়। পরে কৌশলে পুলিশের হাত গলে পালিয়ে যায় তারা।
এদিকে, এ ঘটনার পর অন্ধ্রপ্রদেশের পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোকে সতর্ক করে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের তথ্যমতে, পশ্চিমবঙ্গের মালদাহ সীমান্ত দিয়ে এই চক্রের সদস্যরা বিচ্ছিন্নভাবে ভারতে প্রবেশ করে। পরে তারা এক জায়গায় সমবেত হয়। অপরাধ সংঘঠনের পর চোরেরা মালদাহর পূর্ব পরিকল্পিত এলাকায় সমবেত হয়। পরে সেখান থেকে তারা বাংলাদেশে সুযোগ বুঝে ঢুকে পরে।
গত ৫ আগস্ট এই চক্রের সদস্যরা পটামাতা এলাকার আরটিসি কলোনির ব্যবসায়ী থিয়াগা ক্রিস্টোফার করুণাকরের বাসায় হানা দেয়। এ সময় তারা তিনটি হীরার গহনা, তিনটি দামী ক্যামেরা, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও নগদ অর্থসহ প্রায় ৫০ লাখ রুপি হাতিয়ে নেয়। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তে বেরিয়ে আসে বাংলাদেশি এই চোর চক্রের সদস্যরা ওই চুরির ঘটনায় জড়িত। তবে এ ঘটনায় স্থানীয় কোনো চক্র বাংলাদেশি চক্রটিকে সহায়তা করছে কিনা তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
বাংলাদেশি এই চক্রের কৌশলের কাছে রীতিমতো ধরাশায়ী অবস্থা অন্ধ্র পুলিশের। পুলিশ বলছে, বাংলাদেশি চক্রটিকে স্থানীয় চোররা সহযোগিতা করছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কেননা ওই গ্রুপটি চুরির আগে সিসিটিভি ক্যামেরা, প্রহরী ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য চুরির আগে রেকি করেছিল।
একজন তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মালদা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশকারী ওই দলটির সদস্যদের চিহ্নিত করেছিল পুলিশ। এমনকি তাদেরকে অনুস্মরণ করে সীমান্ত পর্যন্ত এগিয়ে আসে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের চোক ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পরে ওই চক্রটি।
বিজয়াওয়াদার পুলিশ কমিশনার ড. গৌতম শেওয়াং বলেন, বাংলাদেশি এই চোর চক্রটি বিজয়াওয়াদায় বেশ কয়েকদিন অবস্থান করেছিল এবং তাদের কার্যক্রমের বিষয়ে আমাদের কাছে যথেষ্ঠ তথ্য প্রমাণ আছে। তিনি বলেন, স্থানীয় এবং রাজ্যের চোরদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ আছে কিনা তা আমার খতিয়ে দেখছি। শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করা হবে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
এসআইএস