রামগঞ্জে বিদ্যুৎ দেয়ার নামে প্রতারণা
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বলড়া গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ও সংযোগ দেয়ার নামে লোকজনের কাছ থেকে অন্তত নয় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সম্পাদক হাবিবুর রহমান পবনের নাম ভাঙিয়ে স্থানীয় যুবলীগের ছয় ব্যক্তি এ টাকা আদায় করেছেন বলে বিদ্যুৎ প্রত্যাশীদের অভিযোগ। তবে কেন্দ্রীয় ওই যুবলীগ নেতা প্রতারিতদের আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে টাকা উত্তোলনকারীদের সঙ্গে একাধিকবার লোকজনের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বলড়া গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। এজন্য সম্প্রতি ওই গ্রামের যুবলীগকর্মী শাহাদাত হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম ও জাকির হোসেনসহ ছয় ব্যক্তি লোকজনের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করে। তারা কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা পবনের অনুসারী হিসেবে স্থানীয়ভাবে পরিচিত। ওই গ্রামে বিদ্যুতের ১১৪টি মিটার দেয়ার কথা বলে যুবলীগ নেতা পবনের নাম ভাঙিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৬ হাজার ৬৭০ টাকা করে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা আদায় করেছেন।
এছাড়া বিদ্যুতের খুঁটির জন্য দেওয়ান বাড়ির খোকন, বেপারী বাড়ির বিল্লাল হোসেন, মিঝি বাড়ির সফিক মিয়া, পাটোয়ারী বাড়ির বেলায়েত পাটোয়ারী কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে, চকিদার বাড়ির জয়নালের কাছ থেকে ১৫ হাজারসহ প্রায় দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।
প্রতারিত লোকজন জানিয়েছেন, টাকা উত্তোলনকারীরা স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মী। এজন্য কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেনি। তাদের চাহিদা মতো টাকা না দিলে ভবিষ্যতে আর ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে না বলে তারা প্রচার করেছেন।
এ ব্যাপারে টাকা উত্তোলনকারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যুবলীগ নেতা পবনের নির্দেশেই অবহেলিত এ গ্রামে বিদ্যুৎ আনতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। যে টাকা উত্তোলন হয়েছে, তা ঢাকা ও লক্ষ্মীপুরে অফিস খরচ বাবদ ব্যয় করা হয়েছে। কোনো টাকা আমরা আত্মসাৎ করিনি।
নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আবুল কাশেম বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ ও খুঁটি নিতে সামান্য টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ নিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। আমি এর প্রতিবাদ করায় টাকা উত্তোলনকারীদের সঙ্গে এখন মনোমালিন্য চলছে।
কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান পবন বলেন, আমি শুধু বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমোদন নিয়ে দিয়েছি। এ নিয়ে কেউ টাকা উত্তোলন করেছে কিনা আমার জানা নেই। কেউ প্রতারিত হলে আমি আইনের আশ্রয় নিতে বলব।
লক্ষ্মীপুর জেলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের রিটেইনার ইঞ্জিনিয়ার মীর আশরাফুল ইসলাম জানান, রামগঞ্জের বলড়া গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ সরবরাহের জন্য কাজ চলছে। বিদ্যুৎ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি কেউ তাকে জানায় নি। প্রতারণা এড়াতে পল্লী বিদ্যুতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হয়েছে।
কাজল কায়েস/এসএস/পিআর