নওগাঁয় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন : স্বামী আটক


প্রকাশিত: ০৫:২৫ এএম, ০২ নভেম্বর ২০১৫

যৌতুকের জন্য স্ত্রী তাসনুবা রেজা ত্রপাকে প্লাস, জানালার পর্দা লাগানোর পাইপ, মোটরসাইকেলে ব্যবহৃত লম্বা লক তালা ও স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতন করেছেন স্বামী লাহরী খান। নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী নওগাঁ পিডিবির উপ-সহকারী প্রকৌশলীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নির্যাতনের স্বীকার তাসনুবা রেজার মা মোছা. লুৎফুন নেছা নওগাঁ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। নির্যাতনের স্বীকার তাসনুবার পরিবার ন্যায় বিচারের দাবি জানান।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে তাসনুবা রেজার কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের কেতু খানের ছেলে নওগাঁ জেলায় কর্মরত পিডিবির উপ-সহকারী প্রকৌশলী লাহরী খানের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাসনুবা রেজা কুষ্টিয়া শহরের আমলাপাড়ার সোহেল রেজার কন্যা ও কুষ্টিয়া ইসলামীয়া কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। বিয়ের সময় প্রায় দুই লাখ টাকার স্বর্ণের গহনা এবং ঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দেড় লাখ টাকার উপঢৗেকন দেয়া হয়।

বিয়ের পর চাকরির সুবাদে গত ১৩ অক্টোবর তাসনুবা রেজাকে নিয়ে কর্মস্থল নওগাঁয় চলে আসে লাহরী খান। নওগাঁ শহরের চক-এনায়েত মহল্লায় একটি বাড়ির চার তলায় ফ্লাটে ভাড়া থাকতেন। বিয়ের পর থেকেই প্রকৌশলী সোহেল রেজা পরকীয়া প্রেম জড়িয়ে পরেন। এ নিয়ে লাহরী খানের পরিবারের সঙ্গে কয়েক বার বৈঠক হয়।

পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে ও যৌতুকের পাঁচ লাখ টাকার জন্য স্ত্রীর পরিবারের উপর দাবি করতে থাকেন। এতে স্ত্রী বাধ সাধলে নেমে আসে পাশবিক নির্যাতন। এরই জের ধরে গত ২৩ অক্টোবর নওগাঁ ভাড়া বাসায় সকালে ঘুম থেকে ডেকে তুলে স্বামী লাহরী খান, মজিদ ওরফে দুলাল, সহকারী প্রকৌশলী হারুন, এসডি সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল করিম, বাড়ির মালিক প্রফেসর মনিরুজ্জামান বিদ্যুৎ বাসায় থাকা প্লাস, জানালার পর্দা লাগানোর পাইপ, মোটরসাইকেলে ব্যবহৃত লম্বা লক তালা ও স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তাঁর ওপর নির্যাতন চালান।

সংবাদ পেয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাসনুবাকে উদ্ধার করলেও থানায় মামলা দায়ের করতে না পেরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেন পরিবারের লোকজন। ঘটনার ১০দিন পর পুলিশের সহযোগিতায় রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্বামীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নির্যাতনের স্বীকার তাবনুবার মা মোছা. লুৎফুন নেছা। মামলা দায়ের শেষে পুলিশের সহযোগিতায় রাতেই তারা নওগাঁ ছেড়ে চলে যান।

নওগাঁ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ তাসনুবার স্বামী লাহরী খানকে গ্রেফতার করে। এছাড়া অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আব্বাস আলী/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।