অজানা আতঙ্কে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের পরিবার


প্রকাশিত: ০১:২৪ পিএম, ০১ নভেম্বর ২০১৫

রাজধানীতে বিগত কয়েকমাসে ব্লগার, বিদেশি নাগরিক,  পীর ও সর্বশেষ শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে দিনে দুপুরে জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শঙ্কায়  রয়েছে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের পরিবারের সদস্যরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের একাধিক ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য জানিয়েছেন।

তারা বলেন, পেশাগত কারণেই লাশকাটা ঘরে পচা, গলা, খুন, বোমা, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহতদের ময়নাতদন্ত করতে হয়। পরিবারের সদস্যরাও এতদিন পেশাগত কাজ অর্থাৎ চাকরির অংশ হিসেবেই এগুলো মেনে নিতেন।

কিন্তু সম্প্রতি মৌলবাদি সন্ত্রাসীদের কয়েকটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় প্রচারিত ও প্রকাশিত হতে দেখে ওই ধরনের লাশের ময়নাতদন্ত করতে পরিবারের সদস্যরা  নিরুৎসাহিত করছেন।

তাদের আশঙ্কা মৌলবাদি গ্রুপগুলো ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদেরও হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ বর্ণনা করার অপরাধে হামলা করতে পারে। তাই অজানা ক্ষতির আশঙ্কায় এ ধরনের লাশের ময়নাতদন্ত করার দায়িত্ব কৌশলে এড়িতে যেতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে তারা মন্তব্য করেন।

শনিবার শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফীন দিপনের লাশের ময়নাতদন্ত ঢামেক মর্গে সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত করেন ডা. প্রদীপ বিশ্বাস। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় প্রধান ডা. কাজী মুহাম্মদ আবু শামা।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, শক্ত ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে দিপনের  ঘাড়ে ও মাথায় নৃশংসভাবে কোপানো হয়। ঘাড়ের ওপর কোপানোর গভীরতা এত বেশি ছিল যাতে আর একটু হলে মাথা শরীর থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়তো। সাধারণত মৃত্যুর আগে ভিকটিম বাঁচার চেষ্টা করে থাকেন। কিন্তু দিপন সামান্য প্রতিহত করার সুযোগটুকুও পাননি।
তারা জানান, গত ৯/১০ মাসে একাধিক ব্লগার, পীর ও অন্যান্য যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের একই কায়দায় হত্যা করা হয়।

ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকের পরিবার আতঙ্কিত কিনা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিভাগীয় প্রধান বলেন, আমরা ফরেনসিক চিকিৎসকরা ময়নাতদন্ত করে বৈজ্ঞানিকভাবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানাচ্ছি। এটা চাকরির একটা অংশ। তবে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অজানা আশঙ্কা যে একেবারেই নেই তা বলা যাবে না। তবুও দায়িত্ব পালন করে যেতেই হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এমইউ/একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।