টিআইবির বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততা, অর্থায়ন বিষয়ে সরকারের দায়িত্বপূর্ণ অবস্থান থেকে প্রশ্ন উত্থাপন, রাজনৈতিক যোগসাজস উদ্দেশ্যমূলক ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে উল্লেখ্য করা হয়, টিআইবির বিরুদ্ধে এ ধরনের মর্যাদাহানির অভিযোগ নতুন কোনো বিষয় নয় । টিআইবি সরকারের সংশ্লিষ্টদের অনুমোদন ব্যতিরেকে একটি পয়সাও অর্থায়নের জন্য গ্রহণ বা ব্যয় করতে পারে না।
তাছাড়া সংশ্লিষ্ট বিধি-নিয়ম অনুযায়ী টিআইবি আয়-ব্যয়ের সকল হিসাব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত সরবরাহ করে এবং আগ্রহী সকলের অবগতির জন্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করে। টিআইবি সম্পর্কে আইএস বা অন্য কোন জঙ্গি ও দলীয় রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযোগ যে অর্থহীন ও ভিত্তিহীন তা বলারও প্রয়োজন টিআইবি মনে করে না। তবে সরকার বা অন্য যেকোনো পক্ষ যদি এ ধরনের বিষয়ে অনুসন্ধানে আগ্রহী হন, তাহলে টিআইবি সর্বতোভাবে সহায়তা প্রদানে উদ্যোগী হবে।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি কার্যালয়ে “পার্লামেন্ট ওয়াচ: দশম জাতীয় সংসদ-দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ অধিবেশন (জুন ২০১৪-জুলাই ২০১৫)” শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে এর প্রতিক্রিয়ার জবাবে এসব বলে টিআইবি।
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সরকার জোটের সমর্থক জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃস্থানীয় শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিবর্গ প্রতিবেদন প্রকাশের পর মূলত তিনটি বিষয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
বর্তমান সংসদ “পুতুল নাচের নাট্যশালার মতো মনে হতে পারে’ - টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালকের এ মন্তব্য প্রতিবেদনে উত্থাপিত তথ্য ও বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে নাগরিক হিসেবে সংবিধান প্রদত্ত অধিকার বলে তার নিজস্ব অভিমত হিসেবে করেছেন। এতে টিআইবি’র প্রাতিষ্ঠানিক অবস্থানের প্রতিফলন করা হয়েছে-এমন নয়।
যে তথ্য ও বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে নির্বাহী পরিচালক এ মন্তব্য করেছেন তার সারমর্ম হচ্ছে : দশম সংসদ গঠনের পর থেকে যে দলটি “প্রধান বিরোধী দল’’ হিসেবে পরিচিতি গ্রহণ করেছে তার পক্ষ থেকে এক দিকে সরকারের মন্ত্রিসভার অংশ ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে তার শীর্ষনেতার অবস্থান। সুনির্দিষ্ট বিস্তারিত তথ্য টিআইবি’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে রয়েছে।
তাছাড়া “সংসদে সত্যিকারের বিরোধী দল নেই’’ এটি শুধু একটি মন্তব্য নয়, বাস্তব সত্য হিসেবে সর্বজনবিদিত, যা এমনকি সংসদ অধিবেশনেই সংসদ সদস্য কর্তৃক ব্যক্ত হয়েছে। দ্বিমুখী অবস্থান ও আত্মপরিচয়ের সংকটের প্রতিফলন ঘটেছে কথিত “প্রধান বিরোধী দল’’ সংসদে নিজস্ব ভূমিকা নিরূপনে ও তা পালনের ক্ষেত্রে।
জাতীয় সংসদের মত সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি কর্তৃক প্রত্যাশিত ভূমিকা পালনে এধরণের দ্বিধা ও দোদুল্যমানভাবে পুতুলসম আচরণ মনে হতে পারে, এরূপ মন্তব্য করে কাউকে আহত করা নির্বাহী পরিচালকের উদ্দেশ্য ছিল না।
বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন নির্বাচন সমাধান দিতে পারে কি না, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন “বিতর্কমুক্ত নির্বাচন অবশ্যই সমাধানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, তবে কখন ও কীভাবে উক্ত নির্বাচন হবে তা নির্ধারণ করবেন আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।” এ বক্তব্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা কোন বিশেষ মহলের সুবিধার্থে মনে করা ভিত্তিহীন।
এইচএস/এসকেডি/আরআইপি