মসজিদে হামলা : খুনি কখনও ক্ষমা পাবে না, বললেন নিহত শিশুর বাবা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১৩ এএম, ২৬ আগস্ট ২০২০

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে গত বছর মসজিদে হামলার ঘটনায় অর্ধশতাধিক মানুষের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছিল তিন বছরের শিশু মুকাদ ইব্রাহিমও। বর্বর ওই হামলায় সর্বকনিষ্ঠ ভুক্তভোগী হচ্ছে সে। এত অল্প বয়সে প্রাণপ্রিয় সন্তানকে কেড়ে নেয়া খুনিকে কোনওদিনই ক্ষমা করতে পারবেন না তার বাবা আদেল ইব্রাহিম। এ কথা ভরা আদালতে দাঁড়িয়ে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

বুধবার ক্রাইস্টচার্চের হাইকোর্টে হত্যাকারী ব্রেন্টন টারান্টের বিরুদ্ধে এক শুনানিতে আদেল ইব্রাহিম দিরিয়ে বলেন, ‘তুমি আমার সন্তানকে খুন করেছ, এতে মনে হচ্ছে যেন গোটা নিউজিল্যান্ডকেই খুন করেছ।’

‘মনে রেখ, পরকালে তোমার জন্য সত্যিকারের বিচার অপেক্ষা করছে, আর সেটি হবে আরও ভয়াবহ। তুমি যা করেছ, আমি কখনোই তোমাকে ক্ষমা করব না।’

২৯ বছর বয়সী শ্বেতাঙ্গ অস্ট্রেলীয় টারান্টের বিরুদ্ধে ৫১ জনকে হত্যা, ৪০ জনকে হত্যাচেষ্টা এবং মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার মামলায় চলতি সপ্তাহেই রায় দেয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যেই হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি ও ভুক্তভোগী পরিবারের কয়েক ডজন সদস্য আদালতের শুনানিতে অংশ নিয়েছেন। তাদের সবাই টারান্টের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।

new-zealand

নিউজিল্যান্ডের আইন অনুসারে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে এ অপরাধীর। তবে বিচারক চাইলে প্যারোলবিহীন যাবজ্জীবন দণ্ড দিতে পারেন, যদিও নিউজিল্যান্ডে এমন শাস্তি দেয়ার কোনও নজির নেই।

প্রায় ২৫ বছর আগে সোমালিয়া থেকে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জড়িয়েছিলেন ইব্রাহিম দিরিয়ে। বুধবার আদালতে প্রিয় সন্তানের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘সে পুলিশের কাছে যেত এবং খেলা করত; বাড়িতে ইউনিফর্ম পরে পুলিশ হওয়ার অভিনয় করত ও দৌড়ে বেড়াত। আমরা ভেবেছিলাম, একদিন সে হয়তো পুলিশ অফিসার হবে। কিন্তু সেই ভবিষ্যৎ ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।

মসজিদে হামলায় পিতা হারানো আহাদ নবি বলেছেন, ‘কাপুরুষোচিত কর্মকাণ্ডের জন্য টারান্টের কখনোই মুক্তি পাওয়া উচিত নয়।’

new-zealand

হত্যাকারীর চোখে চোখ রেখে আরেক ভুক্তভোগীর মেয়ে সারা কাসেম বলেন, ‘তুমি এখানে সচেতন অবস্থায় বোকার মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন শীতল রক্তের খুবই স্বার্থপর জঘন্য একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছ।’

২০১৯ সালের ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের আল নুর ও লিনউড মসজিদে হামলা চালান ব্রেন্টন টারান্ট। মসজিদ দু’টিতে জুমার নামাজের সময় অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি করে হত্যাযজ্ঞ চালান তিনি। হামলার ঘটনা ফেসবুক লাইভে প্রচারও করেন। ১৭ মিনিট ধরে ওই হামলার সরাসরি ভিডিও প্রচারিত হয়। মুসল্লিদের মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত একের পর এক গুলি ছুড়তে থাকেন শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদে বিশ্বাসী টারান্ট। এ হামলায় ৫১ জন নিহত ও ৪০ জন আহত হন। এমন নৃশংস হামলায় নিউজিল্যান্ডসহ হতবাক হয়ে যায় সারাবিশ্বের মানুষ।

সূত্র: রয়টার্স

কেএএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।