বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে জোর দিয়েছেন শ্রিংলা
বাংলাদেশ সফরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকারের শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মঙ্গলবার দু’দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছান এই শীর্ষ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু বিষয় বিশেষ করে ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ), এনআরসি, রোহিঙ্গা ইস্যু এবং বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েনের মধ্যেই এই সফর করলেন হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে জোর দিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
গত মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। পরবর্তীতে করোনা মহামারির কারণে তার সে সফর বাতিল হয়। ফলে এই আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল যে, ঘনিষ্ঠ এই দেশ দুটির মধ্যে হয়তো সম্পর্কে ফাটল তৈরি হয়েছে।
এর ফলস্বরূপই হয়তো নয়াদিল্লি প্রকাশ্যে এবং দ্বিপাক্ষিকভাবে নিজেদের মধ্যে অংশীদারিত্বের উন্নয়নের প্রতি বেশি জোর দিয়েছে। এদিকে, শীর্ষ কর্মকর্তারা দ্য হিন্দুকে জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে একটি সিরিজ প্রকল্পের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এগুলো সামনের বছরের মধ্যেই হয়তো শেষ হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ এবং ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বর্ষপূর্তির পাশাপাশি শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর ধারাবাহিকতায় উভয় নেতা পুনরায় তাদের বৈঠকের সময়সূচি নির্ধারণ করবেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করও খুব শিগগিরই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে একটি যৌথ পরামর্শক কমিটির বৈঠকে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, গত কয়েক মাসে দুই দেশই তাদের অভ্যন্তরীণ কিছু সেবা বাড়িয়েছে। এই পরিকল্পনায় ত্রিপুরা রাজ্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে কার্গো ফেরি সেবা চালু হয়েছে এবং ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে অনেক রুটে রেলসেবা বৃদ্ধি করেছে।
প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে ভারতের প্রতিশ্রুতির নিদর্শন হিসেবে উভয় দেশ আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ এবং দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ১৩২০ মেগাওয়াট খুলনা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শেষ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বর্তমানে ভারতের উন্নয়ন বাজেটের ২৮ শতাংশ বাংলাদেশে ব্যয় হচ্ছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। সাম্প্রতিক সময়ে করোনা মহামারির কারণে দুই দেশের মধ্যকার বিমানসেবা বন্ধ রয়েছে। পুনরায় বিমান সেবা চালুর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে দুই দেশ।
টিটিএন