‘লেবানিজ প্রধানমন্ত্রী হারিরি হত্যায় হিজবুল্লাহ জড়িত নয়’
ভয়াবহ গাড়িবোমা বিস্ফোরণে লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক আল-হারিরি হত্যাকাণ্ডে সিরিয়ার সরকার অথবা ইরান সমর্থিত শিয়া রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। প্রায় ১৫ বছর আগের এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে জাতিসংঘ সমর্থিত স্পেশাল ট্রাইবুনাল ফর লেবাননের (এসটিএল) বিচারকরা এ রায় দিয়েছেন।
১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সালের গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত লেবাননের পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন হারিরি। যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা বিশ্বসহ ও আরব বিশ্বের সুন্নি দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তার। লেবাননে সিরিয়া এবং ইরানের জন্য সরাসরি হুমকি হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
২০০৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ গাড়িবোমা বিস্ফোরণে লেবাননের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী-সহ অন্তত ২১ জন নিহত ও দুই শতাধিক মানুষ আহত হন। পরে গাড়িবোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে হিজবুল্লাহর চার সদস্য সংশ্লিষ্ট সন্দেহে মামলা দায়ের হয়। যদিও হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও অভিযোগ আনা হয়নি।
জাতিসংঘ সমর্থিত আন্তর্জাতিক বিশেষ আদালতে এই মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করা হয়। এতে হারিরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সিরিয়ার সরকার অথবা ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক এই আদালত।
যদিও বোমা বিস্ফোরণের পরপরই এই গুপ্তহত্যার জন্য সিরিয়াকে দায়ী করে লেবাননের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী। প্রধানমন্ত্রী হারিরি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মুখে প্রায় ৪০ বছর পর লেবানন থেকে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় সিরিয়া।
দ্যা হেগের আদালতের বিচারক ডেভিড রে দুই হাজার ৬০০ পৃষ্ঠার রায় ঘোষণা করছেন। এই মামলার রায়ের সারমর্মে তিনি বলেন, আদালতের বিচারকরা মনে করেন, লেবাননের ক্ষমতা থেকে হারিরি এবং তার রাজনৈতিক মিত্রদের সরিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য সিরিয়া এবং হিজবুল্লাহর থাকতে পারে। তবে হারিরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে হিজবুল্লাহর নেতৃত্বের সংশ্লিষ্টতার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়া এই হত্যাকাণ্ডে সিরিয়ার সরকারের জড়িত থাকার প্রত্যক্ষ প্রমাণও মেলেনি।
চলতি মাসের শুরুর দিকে রাজধানী বৈরুতকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়া এক রাসায়নিক বিস্ফোরণে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি, করোনা মহামারি এবং ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মাঝে টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে লেবানন। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী হত্যাকাণ্ডের এই রায় এল।
সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা।
এসআইএস/এমকেএইচ