যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসায় বর্ণবাদের থাবা, কৃষ্ণাঙ্গ শিশুমৃত্যু ৩ গুণ
অডিও শুনুন
জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের পর শুরু হওয়া সাম্প্রতিক বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন সাড়া ফেলেছে সারাবিশ্বে। এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি তোলপাড় চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। বর্ণবাদের প্রভাব কতটা ভয়াবহ তা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও বর্ণবাদের প্রভাব থাকা যে বড় উদ্বেগের কারণ, তা নিয়ে সন্দেহ নেই কারও। সম্প্রতি জর্জ ম্যাসন ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই এক ভয়াবহ তথ্য।
নতুন ওই গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ নবজাতকের মৃত্যুহার প্রায় তিনগুণ বেশি। এর পেছনে অপুষ্টি বা স্বাস্থ্যজনিত বিভিন্ন দুর্বলতাকে কিছুটা দায়ী করা যায়। তবে গবেষণায় সবচেয়ে আশঙ্কাজনক যে তথ্যটি উঠে এসেছে তা হলো, কৃষ্ণাঙ্গ নবজাতকরা যখন কোনও কৃষ্ণাঙ্গ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকে, তখন তাদের মৃত্যুহার ৩৯ থেকে ৫৮ শতাংশ কমে যায়। অর্থাৎ, দেশটিতে শ্বেতাঙ্গ চিকিৎসকরা কৃষ্ণাঙ্গ নবজাতকদের যথাযথ সেবা দিচ্ছেন না বা দিতে অপরাগ।
অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে মাতৃভ্রূণের মৃত্যুহার খুবই হতাশাজনক। ২০১৮ সালে দেশটিতে প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে ৩ দশমিক ৫ জন জন্মের ২৮ দিনের মধ্যেই মারা গেছে। ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রে মোট ২১ হাজার ৪৬৭টি নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ পরিবারগুলোতে নবজাতক সন্তান হারানোর হার অনেক বেশি।
চিকিৎসকদের মতে, নবজাতকের ওজন তার সুস্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান নির্দেশক। যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ নবজাতকদের মধ্যে কম ওজন নিয়ে জন্ম নেয়ার হার বেশি।
দেশটিতে ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে জন্ম নেয়া ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে, যা শ্বেতাঙ্গ শিশুদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ (৭ দশমিক ১ শতাংশ)।
সোমবার প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস (পিএনএএস)-এ প্রকাশিত হয়েছে এ গবেষণা প্রতিবেদন। এতে বলা হয়েছে, সন্তানসম্ভবা কৃষ্ণাঙ্গ পরিবারগুলোর ঝুঁকি কমাতে কৃষ্ণাঙ্গ চিকিৎসকের সেবা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা অবশ্যই বোধগম্য। তবে সব জনগণের সেবা দিতে যুক্তরাষ্ট্রে খুব কম সংখ্যক কৃষ্ণাঙ্গ চিকিৎসক রয়েছেন।
সূত্র: ডেইলি মেইল
কেএএ/এমকেএইচ