সৌদিকে ব্যবহার করে আমিরাতে সরাসরি বিমান চলাচল শুরু করছে ইসরায়েল
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের আকাশসীমা ব্যবহার করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সরাসরি বিমান চলাচল শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে এই ব্মিান চলাচল শুরু হবে বলে সোমবার জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইসরায়েল দুই দেশের মাঝে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এই শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ফিলিস্তিন সঙ্কট-সহ ইরানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মতো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি খোল-নলচে পাল্টে যেতে পারে।
গত ৭০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে আরব বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসেবে সংযুক্ত আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হতে যাচ্ছে। ১৯৭৯ সালে মিসর এবং ১৯৯৪ সালে জর্ডানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ইসরায়েল।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে কমে যাওয়া বিমান চলাচল সম্প্রসারণের পরিকল্পনার বিষয়ে সোমবার তেলআবিবের বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নেতানিয়াহু। এ সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সরাসরি বিমান চলাচল শুরুর পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। তবে কবে নাগাদ আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশটির সঙ্গে বিমান চলাচল শুরু হবে সেব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কোনও সময়ের উল্লেখ করেননি নেতানিয়াহু।
তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে তেলআবিব থেকে সৌদি আরব হয়ে দুবাই এবং আবুধাবির সঙ্গে সরাসরি বিমান চালুর বিষয়ে কাজ করছি। এই বিমান চলাচল শুরু হলে রোমের মতো মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যে তেলআবিব থেকে আমিরাতে পৌঁছানো যাবে।
ইসরায়েলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করে না সৌদি আরব। এছাড়া ইসরায়েলি বিমান সংস্থাগুলোর জন্য সৌদির আকাশসীমাও বন্ধ রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করেছে। ২০১৮ সালে সৌদির আকাশসীমা ব্যবহার করে নয়াদিল্লি থেকে তেলআবিব রুটে যাত্রী পরিবহনের অনুমতি পায় ভারতীয় বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া।
গত ১৩ আগস্ট ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আবু ধাবির যুবরাজ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদের মধ্যে টেলিফোনে আলোচনায় ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাতের শান্তি চুক্তি নিশ্চিত হয়।ওইদিন এক টুইট বার্তায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আজকের বিশাল সফলতা! আমাদের মহান দুই বন্ধু ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি হয়েছে।’
ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিরা শিগগিরই বিনিয়োগ, পর্যটন, সরাসরি বিমান চলাচল, নিরাপত্তা, টেলিযোগাযোগ ও অন্যান্য বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য বৈঠক করবেন বলে জানান ট্রাম্প। এদিকে, রোববার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে টেলিযোগাযোগ সেবা চালু হয়।
সূত্র: রয়টার্স।
এসআইএস/পিআর