কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের পেটেন্টের প্রথম অনুমোদন দিল চীন
অডিও শুনুন
চীনের ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান ক্যানসিনো বায়োলজিকস তাদের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের পেটেন্টের অনুমোদন পেয়েছে। ক্যানসিনোর অ্যাড৫-এনকোভ নামের এই ভ্যাকসিনের পেটেন্টের অনুমোদন বেইজিং দিয়েছে বলে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত চীনা দৈনিক পিপলস ডেইলির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
দেশটির মেধাস্বত্ব নিয়ন্ত্রকের তথ্যের বরাত দিয়ে রোববার পিপলস ডেইলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি চীনের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম পেটেন্টের অনুমোদন। চীনের জাতীয় মেধাসম্পদ প্রশাসনের প্রকাশিত নথির বরাত দিয়ে দৈনিকটি বলছে, গত ১১ আগস্ট এই পেটেন্ট ইস্যু করা হয়।
এদিকে, সৌদি আরব বলছে, তারা চলতি মাসে চীনের ক্যানসিনো বায়োলজিকসের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরুর পরিকল্পনা করছে। এছাড়া রাশিয়া, ব্রাজিল এবং চিলিতেও তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরুর জন্য এসব দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে ক্যানসিনো।
করোনা ভ্যাকসিনের পেটেন্ট পাওয়ার খবর গণমাধ্যমে আসার পর সোমবার সকালের দিকে হংকংয়ে ক্যানসিনোর শেয়ারের দাম প্রায় ১৪ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া দিনের মধ্যভাগে সাংহাইয়ে ক্যানসিনোর শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ।
গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটির হুবেই প্রদেশের উহানের একটি সামুদ্রিক খাবার বিক্রির বাজার থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। প্রাথমিক গবেষণায় ওই বাজারে বিক্রি হওয়া প্রাণীর দেহ থেকে করোনা সংক্রমণের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানায় বেইজিং।
এরপর বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে নভেল করোনাভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বজুড়ে করোনার সংক্রমণকে মহামারি ঘোষণা দিয়ে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয় কয়েক মাস আগে। প্রায় ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও বিশ্বজুড়ে করোনায় সংক্রমণ এবং মৃত্যু ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। চীনে এই ভাইরাসে ৪ হাজার ৬৩৪ জন মারা গেলেও বিশ্বজুড়ে সেই সংখ্যা ৭ লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে।
অন্যদিকে, চীনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৪ হাজার ৭৫৬ জন। কিন্তু বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ১৮ লাখের বেশি। করোনা মহামারির লাগাম টানতে বিশ্বজুড়ে দুই শতাধিক ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চলছে। অন্তত দুই ডজন ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বিভিন্ন ধাপে রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত রাশিয়া ছাড়া কোনও দেশই এই ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আনতে পারেনি। গত ১১ আগস্ট বিশ্বের প্রথম হিসেবে রাশিয়া করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে দেশটির বিজ্ঞানীদের তৈরি ভ্যাকসিন স্পুটনিক-৫ এর অনুমোদন দেয়।
যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন মূল্যায়নের জন্য এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত কোনও তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়নি। রাশিয়া এই ভ্যাকসিনের সুরক্ষায় আপোস ও দেশটির বিজ্ঞানীদের সক্ষমতা এবং সম্মানের বিষয়ে প্রাধান্য দিতে গিয়ে প্রথম হওয়ার এই দৌড় শেষ করেছে বলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সমালোচনা করেছেন।
রাশিয়ার গামালিয়া ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপে মানবদেহে পরীক্ষাও এখনও সম্পন্ন হয়নি।
সূত্র: রয়টার্স, এএফপি।
এসআইএস/এমকেএইচ