কর্মীর কানের পর্দা ফাটিয়ে দিল ছাত্রলীগ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরহাদ নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা। গত ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ২১০ নম্বর কক্ষে মারধরের এঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে তাকে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছে তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী অভিভাবকের ভাষ্য মতে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফরহাদ। তার গ্রমের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরে কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে নিয়মিত যাতায়াত করতো সে। একদিন পরিচিত হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম গ্রুপের ক্যাডার শিশির ইসলাম বাবুর একান্ত সহযোগী মোতাচ্ছিম বিল্লাহ নোমানের সঙ্গে। সে তাকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বঙ্গবন্ধু হলের এল ৪০৩ নং কক্ষে উঠায়। হলে ওঠার পর থেকেই প্রতিদিন তাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে ফরহাদ অতিষ্ট হয়ে হল ছেড়ে মেসে উঠার কথা জানিয়ে বাবুকে মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠায়। বাবুর নির্দেশে নোমান তাকে বঙ্গবন্ধু হলের এফ ২১০ নং কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। ফরহাদকে ওই রুমে ডেকে নিয়ে দরজা, জানালা আটকিয়ে দেয়। পরে শিশির ইসলাম বাবুর নির্দেশে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১১-১২ শিক্ষাবর্ষের নোমান, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শাওন, কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১০-১১ শিক্ষাবর্ষের আতাউর রহমান, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ছদরুল চৌধুরী আকাশ, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আরিফ তাকে মারধর করে। তারা ফরহাদকে লাথি, চড়, থাপ্পর এবং হকিস্টিক দিয়ে পেটানোর একপর্যায়ে মাথায় এবং কানে উপর্যুপরি ঘুষি মারতে থাকে।
মারধরের একপর্যায়ে ফরহাদ বাবুর পা জড়িয়ে ধরে কিন্তু তারপরেও থামে না নির্যাতন। প্রয় এক ঘণ্টা নির্যাতনের পর সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তার জ্ঞান ফিরলে হলের এল ৪০৩ নং কক্ষে আসলে তার রুমমেটরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে তাকে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ফরহাদ শ্রবণ শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই। ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন, বিষয়টি অবগত নয়। খোঁজখবর নিচ্ছি দেখি ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না।
এমএএস/এমএম