বিচারক হলে রাম মন্দিরের জমি দিতাম স্কুল বানানোর জন্য : তসলিমা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৫৮ এএম, ১০ আগস্ট ২০২০

ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় শুরু হয়েছে বিতর্কিত রাম মন্দির নির্মাণের কাজ। গত ৫ আগস্ট দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথম ইট তুলে দিয়ে এর ভিত্তি স্থাপন করেন।

অযোধ্যার বিতর্কিত এই স্থান নিয়ে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলছে; উভয় সম্প্রদায়ই স্থানটির মালিকানা দাবি করে। ষোড়শ শতকে নির্মিত ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদে ১৯৯২ সালে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা। তারা বলছেন, এটা মূলত তাদের অন্যতম শ্রদ্ধেয় দেবতা রামের মন্দির ছিল।

কয়েক দশকের বেশি সময়ের আইনি লড়াইয়ের পর গত বছর দেশটির সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যার বিতর্কিত এই স্থানের মালিকানা হিন্দুদের বলে রায় দেন। এছাড়া মসজিদ নির্মাণ করার জন্য শহরের অন্য একটি এলাকায় মুসলিমদের ভূমি দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় হিন্দু দেবতা রামের নামে এই মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদি।

এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তার ভেরিফাউড ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘‘যেদিন অযোধ্যার রায় বেরোলো, ২০১৯ এর ৯ নভেম্বরে, সেদিনই লিখেছিলাম ‘আমি যদি বিচারক হতাম, তাহলে ২.৭৭ একর জমি সরকারকে দিয়ে দিতাম আধুনিক বিজ্ঞান স্কুল বানানোর জন্য, যে স্কুলে ছাত্রছাত্রীরা ফ্রি পড়তে পারবে। আর ৫ একর জমিও সরকারকে দিয়ে দিতাম আধুনিক হাসপাতাল বানানোর জন্য, যে হাসপাতালে রোগীরা বিনে পয়সায় চিকিৎসা পাবে।’

আমার এই মতের ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে, আগামী ১০০০ বছরে সম্ভব নয় ধর্মীয় উপাসনালয়ের জায়গায় অন্য কিছু নির্মাণ করা। কেউ কেউ বলেছে, স্কুল, অ্যাকাডেমি, গবেষণাগার, হাসপাতাল, ফুলের বাগান এগুলো বানানোর জায়গার কি অভাব পড়েছে? তা ঠিক, অভাব পড়েনি। তাই ২.৭৭ একর জমিতে মন্দির হতে যাচ্ছে, আর ৫ একর জমিতে হতে যাচ্ছে মসজিদ। মানুষ প্রার্থনা করবে অলৌকিক ঈশ্বরের কাছে, যে ঈশ্বরের অস্তিত্বের আজও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

উত্তর-ইউরোপের গির্জাগুলো দেখলে চমকিত হই। খালি পড়ে থাকে বছরভর। রোববারে হাতেগোনা কয়েকজন আসে কি আসে না। গির্জা চলে পযটকদের জন্য। ওরাই শিল্পস্থাপত্য দেখতে আসে। উপাসনালয়গুলো ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছে জাদুঘরে। আমাদের অঞ্চলের উপাসনালয়গুলোয় হয়তো একদিন ভিড় কমতে থাকবে। মানুষ ব্যস্ত থাকবে মানুষের সেবায়। সেবাই তো সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উপাসনা।’’

বিএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।