বিক্ষোভে উত্তাল বৈরুত, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে দেড় শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে ক্ষুব্ধ লেবাননের হাজার হাজার মানুষ ফের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেছে। সেই বিক্ষোভ দমনে কাঁদানেগ্যাস ছুড়লে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আল-জাজিরা ও বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিক্ষোভে বলপ্রয়োগ ও কাঁদানেগ্যাস ছোড়া শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় কিছু বিক্ষোভকারী। মঙ্গলবারের ওই বিস্ফোরণ গোটা বৈরুতকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। সরকারের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে ক্ষুব্ধ জনতা।
ব্যাপক দুর্নীতি বন্ধ এবং রাজনীতিতে সংস্কার চেয়ে কিছুদিন ধরেই লেবাননে বিক্ষোভ চলছিল। বৈরুতের ভয়াবহ বিস্ফোরণ সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে। সরকারের গাফিলতির কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে দাবি করে গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজপথে বিক্ষোভে নামতে শুরু করে হাজারো মানুষ।
বন্দরের গুদামঘরে ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মজুতে আগুন ধরে ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিশাল পরিমাণ ভয়ানক দাহ্য পদার্থ ছয় বছরের বেশি শহর কেন্দ্রের এত কাছে কোন নিরাপদ ব্যবস্থা না নিয়ে কীভাবে রাখা হলো তা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে দেশটির জনগণ।
যারা এর জন্য দায়ী তাদের খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু দুর্নীতি, মুদ্রার পতন, অর্থনীতির ধস আর রাজনীতির সংস্কারের দাবিতে গত বছরের অক্টোবর থেকে বিক্ষোভ করে আসা লেবানিজরা সরকারের এমন আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছে না। তাই তারা পথকেই বেছে নিয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া দুই মন্ত্রীকে সেখানে পৌঁছাতে দেয়নি ক্ষুব্ধ মানুষজন। ফারেস হালাবি নামে এক তরুণ বিক্ষোভকারী এএফপিকে বলেন, ‘তিন দিন ধরে চারপাশ পরিষ্কার, ধ্বংসস্তুপ মুছে ফেলা আর আমাদের ক্ষত ঢেকে রাখার পর এখন আমাদের ক্রোধ বিস্ফোরিত হওয়ার এবং তাদের শাস্তি দেওয়ার সময় এসেছে’।
বিশাল একটি বিক্ষোভ বন্দরের নিকটবর্তী অন্যতম বিধ্বস্ত অঞ্চল শহীদ স্কয়ারের সঙ্গে সংযুক্ত করবে, যা গত বছর শুরু হওয়া সরকারবিরোধী বিদ্রোহের কেন্দ্রস্থল। কয়েকজন বিক্ষোভকারী দেশের রাজনৈতিক নেতাদের জন্য শহীদ স্কয়ারে ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করেছেন।
সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে ব্যর্থতার দায় নিয়ে তাদের ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বলছে তারা। সরকারবিরোধী ক্ষোভ জানানো ছাড়াও বিশাল ওই গণজমায়েতে বিস্ফোরণে নিহত অর্ধশতাধিক মানুষকে স্মরণ করা হবে। এ ছাড়াও ৫ হাজারের বেশি আহত ও গৃহহারা হওয়া তিন লাখ মানুষের প্রতি সমবেদনা জানাবে বিক্ষোভকারীরা।
এসএ/এমকেএইচ