বৈরুতে হামলার কোনও লক্ষণ নেই: মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একমত নয় মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অন্তত তিন কর্মকর্তা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে নিশ্চিত করেছেন, বিস্ফোরণটি হামলার কারণে ঘটেছে এখনও এধরনের কোনও লক্ষণ বা প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এর আগে, মঙ্গলবার রাতে বৈরুতে বিস্ফোরণের পর হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সামনে এ ঘটনাকে ভয়ঙ্কর হামলা বলে মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এসময় তিনি লেবাননের জনগণের প্রতি সহানুভূতি এবং প্রয়োজনে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন।
মঙ্গলবার বৈরুতের বন্দর এলাকায় একটি গুদামে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুত ছিল। বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত এবং চার হাজার মানুষ আহত হওয়ার খবর এসেছে।
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প বলেন, ‘‘লেবাননের জনগণের প্রতি আমেরিকার গভীর সহানুভূতি রইল, যেখানে খবর পাওয়া যাচ্ছে বিশাল বিস্ফোরণে বহু নিহত ও কয়েকশ’ মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। এতে ভুক্তভোগী ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের প্রার্থনা রইল।’’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে লেবাননের জনগণের সম্পর্ক খুবই ভালো এবং এ ব্যাপারে আমরা তাদের সহযোগিতা করব। এটি ভয়াবহ হামলা বলে মনে হচ্ছে।’
বৈরুতে বিস্ফোরণ কোনও দুর্ঘটনা নয়, বরং হামলা- এ ব্যাপারে নিশ্চিত কিনা সংবাদ সম্মেলনে জিজ্ঞাসা করলে ট্রাম্প বলেন, মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা তাকে যা বলেছেন তাতে সেটাই মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কয়েকজন জেনারেলের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। তারা মনে করছেন, এটি সাধারণ বিস্ফোরণের কোনও ঘটনা নয়। তারা আমার চেয়ে ভালো জানেন। কিন্তু তাদের মনে হয়েছে, এটা হামলা। এটা কোনও এক ধরনের বোমা ছিল।’
তবে নাম না প্রকাশের শর্তে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, প্রেসিডেন্ট হামলার বিষয়ে যা বলেছেন তা সম্পর্কে তারা জানেন না। এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যদি এই অঞ্চলে এত ব্যাপকভাবে কারও কিছু করার ইঙ্গিত থাকত, তবে সেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন সেনা ও সম্পদের নিরাপত্তা বেড়ে যেত। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ধরনের কিছুই ঘটেনি।’
বৈরুতে বিস্ফোরণের কারণ নিয়ে এখনও পরস্পরবিরোধী তথ্য আসছে। প্রাথমিকভাবে বন্দরের কাছে একটি গুদামে আতশবাজি থেকে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের মাধ্যমে ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ ছিল। পরে নিরাপত্তা অধিদপ্তরের পরিচালক জানান, বাজেয়াপ্ত হওয়া উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক পদার্থ থেকে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তিনি এর বাইরে বিস্তারিত কিছু জানাননি। লেবাননের কর্মকর্তারা এ বিস্ফোরণকে হামলার ঘটনা বলেও স্বীকার করেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের দুই কর্মকর্তা বলেছেন, এ পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘হামলা’ শব্দটি ব্যবহার করায় উদ্বেগ জানিয়েছে লেবানন।
কেএএ/এমকেএইচ