২৫ বছর পর বিয়ে করলেও মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে বিপত্তি
বিয়ে অনেকেই করেন। কিন্তু মধুচন্দ্রিমা সবার ভাগ্যে জোটে না। একসঙ্গে থাকার ২৫ পর বিয়ে করলেও মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে বিপত্তি ঘটেছে নিউজিল্যান্ডের এক নবদম্পতির। বিয়েকে স্মরণীয় করতে গিয়েছিলেন ফকল্যান্ডে। করোনার কারণে প্রায় বন্দিদশায় কেটেছে মধুচন্দ্রিমার পাঁচটি মাস।
নেভিল ক্লিন্টন আর ফিওনা ক্লিন্টনের পঁচিশ বছরের সংসার৷ তিনটি সন্তানও আছে তাদের। কিন্তু ২৫ বছর একসঙ্গে সুখে-শান্তিতে বাস এবং তিন সন্তানের বাবা-মা হলেও এতদিন বিয়ে করেননি। তবে বিয়েটা অবশেষে করলেন। করলেন একটা বিশেষ দিন দেখে। ২০২০ সালের লিপ ইয়ার, অর্থাৎ ২৯ ফেব্রুয়ারি ২৫ বছরের পুরোনো জুটি গাঁটছড়া বাঁধলেন। সেদিনই হানিমুন করতে রওনা দিলেন নেভিলের জন্মভূমি ফকল্যান্ডের উদ্দেশে।
শৈশবেই ফকল্যান্ড ছাড়লেও জন্মস্থানের প্রতি দুর্দমনীয় একটা আকর্ষণ ছিল ৫৯ বছর বয়সি নেভিলের। সামাজিকভাবে সদ্য স্ত্রী হওয়া ফিওনাও চেয়েছিলেন কয়েকটা দিন চুটিয়ে আনন্দ করবেন সেখানে, তারপর যাবেন ব্রাজিলে, দক্ষিণ অ্যামেরিকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় অঞ্চলটা ঘুরে দেখে তারপর ফিরবেন অকল্যান্ডে নিজেদের বাড়িতে।
কিন্তু বিধি বাম! ৭ মার্চ ফকল্যান্ডে পৌঁছালেন কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার নেভিল আর শিল্পী ফিওনা। শুরু হয়ে গেল করোনার ভয়াবহ বিস্তার। শুরু হলো প্রবীণ এক আত্মীয়ার সঙ্গে থেকে লকডাউন অবসানের দিন গোনা। ব্রাজিলের ফ্লাইট বাতিল। সব দেশেই বিমান চলাচল বন্ধ। কবে ফেরা হবে কে জানে!
তাই তাস খেলে, আলবাট্রস আর ডলফিন দেখে দেখে কাটতে লাগল একের পর এক অনিশ্চয়তায় ভরা দিন। কিন্তু ফিরতে তো হবে। ফিরবেন কিভাবে?
অবশেষে ভাবলেন মাছধরা নৌকায় চড়ে ফিরে যাবেন ‘সুইট হোম’-এ। সে অনুযায়ী যাত্রাটা শুরু হলেও অবশ্য যাত্রাটা খুব ‘সুইট’ ছিল না। এক মাসেরও বেশি সময়ে আর্জেন্টিনা থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরের ফকল্যান্ড থেকে আটলান্টিকের স্রোত ভেঙে ভেঙে ৯২০০ কিলোমিটার (৫০০০ নটিক্যাল মাইল) পেরিয়ে নিজের শহর অকল্যান্ডে ফেরা তো কম কথা নয়।
তবু ভালো, ফিরেছেন তারা, করোনার সব বাধা পেরিয়ে ফিরেছেন সন্তানদের কাছে। করোনা-পরীক্ষা করাতে হয়েছে ফিরেই। সুখবর-সুখি দম্পতির কাউকেই করোনাও ছুঁতে পারেনি!
এএইচ/পিআর