জলপাই সিদ্ধের অপরাধে ঝলসে দেয়া হলো শরীর
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় জলপাই সিদ্ধ করার অপরাধে সৎমা বিলকিস বেগমের নিক্ষেপ করা গরম পানিতে ঝলসে গেছে নূপুর (৯) নামে এক শিশুর শরীর ও দুই হাতের কনুই। সোমবার বিকেলে নিজ বাড়িতে ঘটনাটি ঘটলেও সংবাদকর্মীরা মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি জানতে পারেন।
ঘটনার পর প্রথমে শিশু নূপুরকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি ঘটলে মঙ্গলবার দুপুরে নূপুরকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠান চিকিৎসক।
নূপুর গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকার প্রগতিপাড়ার বেলাল হোসেনের মেয়ে। সে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কুঠিবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
হাসপাতালে শিশু নূপুর জানায়, ৫-৬ বছর আগে তার মা মারা যান। বাবা আবার বিয়ে করেন। এরপর থেকে সে সৎমা বিলকিস বেগমের সঙ্গে প্রগতিপাড়ার বাসায় থাকতো। প্রায়ই বিভিন্ন কারণে তাকে বিলকিস বেগম মারপিট ও বকাঝকা করতেন। সোমবার বিকেলে বাসার চুলায় পাতিলে করে কয়েকটি জলপাই সিদ্ধ করছিলাম। এসময় বিলকিস বেগম এসে বকাঝকা শুরু করেন। এক পর্যায়ে জলপাই সিদ্ধ করা গরম পানির পাতিল আমার শরীরে ছুড়ে মারেন। এতে গরম পানিতে আমার শরীর ঝলসে যায়।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. সজিব কুমার সরকার জাগো নিউজকে জানান, গরম পানিতে নূপুরের শরীরের বেশ কিছু অংশ ঝলসে গেছে। তার কোমরের নিচের অংশ ও দুই হাতের কনুই মারাত্মকভাবে ঝলসে যায়। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এসব অভিযোগ কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন নূপুরের বাবা বেলাল হোসেন। কিভাবে নূপুরের শরীর ঝলসে গেছে তা জানতে চাইলে সাংবাদিকদের স্পষ্ট করে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাম্মেল হক বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে জানান, নূপুরের ঝলসে যাওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন। তবে অশান্তি ও সংসার ভাঙার ভয়ে নূপুরের বাবা বেলাল হোসেন কোনো অভিযোগ বা মামলা করবেন না বলে তাকে জানিয়েছেন।
অমিতাভ দাশ/এমজেড/আরআইপি