দুদক কর্মকর্তাদের তলবের সিদ্ধান্ত সংসদীয় কমিটির
যথেষ্ট তথ্যপ্রমান থাকা সত্ত্বেও বেসিক ব্যাংকের টাকা লুটের সঙ্গে জড়িত পরিচালনা পর্ষদ বা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্দীতি দমন কমিশন (দুদক) কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংসদীয় কমিটি। এজন্য এ তদন্ত কাজে জড়িত দুদক কর্মকর্তাদের তলবের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
জাতীয় সংসদ ভবনে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, আবদুল ওয়াদুদ, টিপু মুনশি, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও আখতার জাহান অংশ নেন।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বুধবার সকালে জাগো নিউজকে বলেন, দুদকের দায়িত্ব দুর্নীতিবাজদের শাস্তি নিশ্চিত করা। কিন্তু তারা তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার পরও অনেক সময় বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ জন্য দুদককে কমিটির বৈঠকে তলব করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের উপস্থিতিতে কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, বেসিক ব্যাংকের টাকা লুটের সঙ্গে জড়িত কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এর পরিচালনা পর্ষদ বা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ জন্য দুদকের সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে বেসিক ব্যাংকের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যায়। বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ৪৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এসব উদ্ঘাটিত বিষয় দুদকে পাঠানো হয়েছে, যার ভিত্তিতে দুদক ব্যবস্থা নিতে পারে।
বৈঠক সূত্র জানায়, দুদকের তদন্তে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই ও পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উত্থাপিত না হওয়ায় কমিটির সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠকে দুদককে বা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে সংসদীয় কমিটিতে ডাকা যায় কি-না, সে বিষয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে কমিটি সংসদ সচিবালয়ের আইন কর্মকর্তাদের মতামত চাইলে তারা ডাকা যাবে বলে জানান এবং এ-সংক্রান্ত সংসদের কার্যপ্রণালি বিধি পড়ে শোনান।
কার্যপ্রণালি বিধির ২০৩ ধারায় বলা আছে, কোনো প্রতিষ্ঠানের রেকর্ড, কাগজপত্র এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তলব করার ক্ষমতা কমিটির থাকবে। কোনো ব্যক্তির সাক্ষ্য বা দলিল-দস্তাবেজ কমিটির কাজে প্রয়োজনীয় কি-না, সেই প্রশ্ন উত্থাপিত হলে বিষয়টি স্পিকারের কাছে পাঠাতে হবে এবং স্পিকার যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তা-ই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে সরকার দলিল জমা দেওয়ার বিষয়ে অনিচ্ছা প্রকাশ করতে পারবে।
এইচএস/আরএস/এমএস