কলকাতা হাইকোর্টে ‘লর্ড’ বলার চল বাতিল
বহু বছরের ঔপনিবেশিক চলে বদল আসছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই বদলের যিনি পুরোধা, তিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণণ। প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, তিনি চান পশ্চিমবঙ্গ ও আন্দামানের বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তারা যেন তাকে প্রচলিত ‘মাই লর্ড’ নয়, ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করেন।
এখন থেকে এই নিয়মই বলবৎ হবে বলে জানানো হয়েছে আদালতের পক্ষ থেকে। বৃহস্পতিবারই হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেল রাই চট্টোপাধ্যায় প্রধান বিচারপতির ওই বার্তা পশ্চিমবঙ্গ ও আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের জেলা জজ এবং নিম্ম আদালতের প্রধান বিচারপতিদেরও পাঠিয়ে দিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এখন থেকে রেজিস্টারসহ জেলা বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে ‘মাই লর্ড’ কিংবা ‘লর্ডশীপ’ এর পরিবর্তে স্যর বলে সম্বোধন করবেন। বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদেরও এমনটাই করতে হবে।
এর ফলে সম্বোধনের ঔপনিবেশিক সংস্কৃতির মানসিকতার পরিবর্তে এবার মাই লর্ড, ইয়োর অনার বা লর্ডশিপের বদলে স্যার বলার প্রচলন শুরু হচ্ছে। এই মাই লর্ড বা লর্ডশিপ বাতিলের দাবি নিয়ে এর আগে ২০১৪ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল।
মলায় সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি এইচ এল দাত্তু ও বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবদের (এখন তিনি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে রয়েছেন) ডিভিশন বেঞ্চ এক রায়ে বলেছিলেন, বিচারপতিদের লর্ড, লর্ডশিপ বা ইয়োর অনার বলে সম্বোধন বাধ্যতামূলক নয়। বিচারপতিদের সম্মান জানাতে স্যার বলা যেতে পারে।
এই রায়ের পর রাজস্থান হাইকোর্ট গত বছর এক সিদ্ধান্ত নেয়। ওই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাটের উদ্যোগে ফুল কোর্টের বৈঠকে বিচারপতিদের স্যার সম্বোধন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে অবশ্য ২০০৬ সালে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলী ধর তাকে স্যার সম্বোধনের রীতি চালু করেছিলেন। এই বিচারপতি কয়েক মাস আগে দিল্লি থেকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলি হয়ে গিয়ে একই নির্দেশ দিয়েছেন। ২০০৬ সালে বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া মাই লর্ড সম্বোধন বাতিলেরও প্রস্তাব দিয়েছিল।
এসএ/জেআইএম