মায়ের সঙ্গে বাড়ির পথে ফজলু
বিনাদোষে ২২ বছর সিলেট কারাগারে বন্দিজীবন কাটিয়ে সদ্য জামিনে বের হয়ে আসা ফজলু মিয়াকে দীর্ঘ ২৮ বছর পর নিজবাড়ি জামালপুরের উদ্দেশ্যে মাইক্রোবাসযোগে রওনা দিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের সঙ্গে রয়েছেন জামালপুরের এনডিসি জোর্তিময় বড়ুয়াও।
ফজলুকে জামালপুরের বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে গত ২৪ অক্টোবর শনিবার বিকেলে জামালপুরের এনডিসি জোর্তিময় বড়ুয়া, ফজলুর মা মজিরন বেওয়া, বোন হামিদা বেগম, ভগ্নিপতি মন্টু মিয়া, নানা মৌলভী হাসমত উলাহসহ পরিবারের সাত সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে মাইক্রোবাসযোগে সিলেটের সুরমা থানার ধরাধরপুর আসেন।
অবশেষে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় আইনি বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে ছেলে ফজলু মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান মা মজিরন বেওয়া। দুই দিন সিলেটে অবস্থান করে বিকেলে তাকে নিয়ে জামালপুর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন তারা।
তবে আগামী ২২ নভেম্বর সিলেট মহানগর হাকিম আদালতে ফজলু মিয়ার মামলার হাজিরার দিন ধার্য করা হয়েছে। সেই তারিখে জামালপুরের জেলা প্রশাসক নিজ উদ্যোগে দুইজন জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্টেটসহ ফজলুকে সিলেট পাঠানোর আশ্বাস দেন। এরপর বিকেলে বোন হামিদা বেগম, মামা আবদুল হালিম ও মফিজ উদ্দিনের জিম্মায় ফজলুকে জামালপুর যেতে দেয়া হয় বলে জানান ফজলু মিয়ার জিম্মদার সাবেক ইউপি সদস্য ও ছোটবেলার বন্ধু কামাল উদ্দিন রাসেল।
এর আগে সোমবার দুপুরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আর্থিক অনুদান হিসেবে নগদ ২০ হাজার টাকা ফজলু মিয়ার হাতে তুলে দেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব। আর্থিক অনুদানের পাশাপাশি আগামীতে সিলেটে আসলে তার চিকিৎসার ব্যাপারে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাসও দেয় কর্তৃপক্ষ।
জামালপুরের এনডিসি জোর্তিময় বড়ুয়া জাগো নিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসক মো. শাহাবুদ্দিন খান নির্দেশে ফজলু মিয়াকে আমরা তার বাড়ি জামালপুরে নিয়ে যাচ্ছি। তাকে আইনি ও চিকিৎসা সহায়তাও প্রদান করা হবে। আগামী ২২ নভেম্বর মামলার ধার্য তারিখের আগেই তাকে সিলেট নিয়ে আসা হবে।
প্রসঙ্গত, ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে দীর্ঘ ২২ বছর কারাগারে রাখা হয়েছিলো ফজলু মিয়াকে। গত ১৫ অক্টোবর তিনি জামিনে মুক্তি পান। কারগারে যাওয়ার ছয় বছর আগে ফজলু মিয়ার বয়স যখন ১০ থেকে ১২ তখন জামালপুরের গ্রামের বাড়ি শাহবাজপুর ইউনিয়নের সাউনিয়া থেকে পালিয়ে এসেছিলেন তিনি। এরপর মায়ের সঙ্গে দেখা নেই।
ছামির মাহমুদ/এআরএ/এমএস