টিআইবি পেইড এজেন্ট : চিফ হুইপ
জাতীয় সংসদ নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেছেন, পেইড এজেন্ট হিসাবে কাজ করে চলেছে টিআইবি। প্রতিষ্ঠানটির এধরনের মন্তব্য উদ্দেশ্য প্রনোদিত, বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন। আমরা এ প্রতিবেদনের নিন্দা জানিয়ে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি এবং এ ধরনের অগণতান্ত্রিক প্রচেষ্টা থেকে টিআইবিকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। দেশে দুইজন বিদেশি হত্যা এবং বোমা হামলায় একজনের মৃত্যুর সময় টিআইবির এধরনের প্রতিবেদন রাজপথ ও সংসদকে অকার্যকর করার জন্যই করা হয়েছে। কোনো আন্তর্জাতিক মহলের চক্রান্তে তারা এ কাজটি করেছে বলে আমাদের মনে হয়।
সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এসময় অন্য হুইপদের মধ্যে আতিকুর রহমান আতিক, মাহবুব আরা গিনি ও ইকবালুর রহিম উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগের দিন রোববার জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ অধিবেশনের কার্যক্রমের পর্যাবেক্ষণ ও বিশ্লেষণভিত্তিক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওপর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)। এতে বর্তমান সংসদের বিভিন্ন দিক নিয়ে সমালোচনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে চিফ হুইপ আরো বলেন, টিআইবি বর্তমান সংসদকে পুতুল নাচের নাট্যশালার সঙ্গে তুলনা করে নিয়ম রক্ষার সংসদ চলছে বলে মন্তব্য করেছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এধরনের মন্তব্য করে সংবিধান ও চলমান সংসদকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অপমান করা হয়েছে। এ ধরনের মন্তব্য করার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? টিআইবি নিজেই পাচের পুতুল। প্রভুদের সুতার টানেই তারা নাচে।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টিআইবির বিরুদ্ধে এখনই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না তা বলতে পারছি না। কারণ সংসদ নেতা আছেন, স্পিকার আছেন, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা আছেন। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
আ স ম ফিরোজ বলেন, বর্তমানে সংসদ সুন্দরভাবে চলছে। সংসদে কোনো গালাগালি নেই, মারামারি নেই, উশৃঙ্খল কার্যক্রম নাই। কটুক্তি নেই। বরং সরকারি ও বিরোধীদলের গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমেই বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি দিন দিন উজ্জ্বল হওয়ায় এটি আন্তর্জাতিক মহলেরও চক্রান্ত হতে পারে।
এ সময় হুইপ ইকবালুর রহমান বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে টিআইবির কাছে আইন প্রণয়ন শিখতে হবে। আমরা অনুরোধ করবো আগামী নির্বাচনে তারা অংশ নিক, সংসদে আসুক। তারা যে এসব রিপোর্ট দিচ্ছে তাদের আয়ের উৎস কি? আমি আজ আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে প্রশ্ন করতে চাই-টিআইবির অর্থ কীভাবে আসে? তাদের অর্থ কীভাবে খরচ হয়? কে জোগান দেয়? মানুষ এসব জানতে চায়। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের ঢাকায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট আছে। সেই ফ্ল্যাটটি আন্ডারফেলু দিয়ে রেজিস্টেশন করা হয়েছে। এটি সাংবাদিকরা পরীক্ষা করে দেখুক।
প্রধান হুইপ আরো বলেন, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ‘সংসদ ক্ষমতাসীন দলের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ভূবনে পরিণত হয়েছে’। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা পেলে তাতে আওয়ামী লীগের দোষ কোথায় সে বিষয়টি আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। এক্ষেত্রে প্রতিবেদকের গাত্রদাহের কারণও আমাদের কাছে অজানা
তিনি বলেন, অসংসদীয় আচরণ ও ভাষার ব্যবহার বন্ধে স্পিকারের শক্তিশালী ভূমিকার অনুপস্থিতি মর্মে যে মন্তব্য করা হয়েছে তা আদৌ সত্য ও সঠিক নয়। বরং সংসদে কোনো অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্পিকার রুলস অব প্রসিডিউর অনুযায়ী সেগুলো এক্সপাঞ্জ করে থাকেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে স্পিকারের শক্তিশালী ভূমিকার অনুপস্থিতি কোথায় তারা দেখলেন এ বিষয়টি আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। এখানে প্রতিয়মান হয় এ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে টিআইবি কলঙ্কিত করার অভিলাসে তাদের পেইড এজেন্ট হিসাবে কাজ করে চলেছে।
এইচএস/একে/এমএস