স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবি
স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিওভুক্ত দেশের ৮ হাজারের অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়েছেন নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা। সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানান শিক্ষকরা।
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটি এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এসময় সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. এশারত আলী দাবি আদায়ে প্রয়োজনে লাগাতার কর্মসূচি অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেন শিক্ষকরা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের নিয়ে চলে এ কর্মসূচি। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলবে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ তাপস কুমার কুণ্ড। এর আগে বিকেল ২টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সাথে সংহতি জানিয়েছেন সাংবাদিক আবু সাঈদ খান ও কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন।
আবু সাঈদ খান বলেন, ‘একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে হলে আমাদের প্রথমে শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। এটিকে গুরুত্ব দিতে হয়। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে আজ আমাদের দেশে সবচেয়ে অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন আমাদের শিক্ষকরা। স্বাধীনতার চুয়াল্লিশ বছরেও আমরা এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে আমরা অক্ষর জ্ঞান দিতে পারিনি। এর কারণ হচ্ছে শিক্ষার যে গুরুত্ব দেয়া উচিত আমরা তা দিচ্ছিনা। আমরা বড় বড় বাজেট ঘোষণা করছি কিন্তু শিক্ষার প্রতি আমরা নজর রাখছি না। তাহলে আমাদের শিক্ষার কিভাবে উন্নিত হবে। যেখানে এ খাতটাকে সবচেয়ে নজর দেয়া দরকার তা আমরা না করে অন্য দিকে বরাদ্দ বাড়াচ্ছি। যা কমিয়ে এনে শিক্ষা খাতে নজর দেয়া দরকার।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশটাকে যদি এগিয়ে নিতে হয়, আমাদের শিক্ষার হার যদি বাড়াতে হয়, আমাদের শিক্ষার মান যদি বাড়াতে হয়, তাহলে শিক্ষকদের বেতন দিতে হবে। এটা কেবল শিক্ষকদের দাবি নয়, এটি জাতীয় দাবি। এটি জনগণের দাবি। এটি অন্যায়, এটি অবিচার। আমরা মনে করি দেশের সামগ্রিক স্বার্থে দেশটাকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে এবং দেশের সামগ্রিক কল্যাণে শিক্ষকদের এ দাবি মেনে নেয়া উচিত।’
কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘শিক্ষাকরা আজ তাদের মানবিক অস্তিত্ব টিকে রাখার জন্য রাস্তায় নামছেন। অন্যকে মানুষ করাতো পরের প্রশ্ন তারা আজ নিজেদের অস্তিত্ব টিকে রাখতে লড়াই করতে হচ্ছে। আমাদের দেশের মর্যাদা বাড়ছে কিন্তু আমাদের শিক্ষকদের মর্যাদা নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মাথাপিছু আয় বাড়ছে কিন্তু আমাদের বস্তবে আয় নেয়। সরকার ২ লক্ষ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করছে। কিন্তু এ সমস্ত শিক্ষকদের পেছনে খরচ হলে আমরা হিসাব করেছি সবোর্চ্চ মাত্র ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লাগে। তারপরও আমাদের শিক্ষকদের আন্দোলনে নামতে হচ্ছে। সুতরাং এ থেকে বোঝা যায় আমাদের টাকা আছে কিন্তু আমাদের ইচ্ছা নেই।’
সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. এশারত আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবি আদায়ে আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখবো। আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে আমরা পুনরায় এখানে অবস্থান নেবো।’
এসময় তিনি কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। দাবি সমূহের মধ্যে রয়েছে-স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করতে হবে। যোগদানের সময় হইতে বয়স গণনা করতে হবে। এবং নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি/পাঠদান বন্ধ রাখতে হবে।
এমএইচ/এসএইচএস/এমএস