উপসাগরতীরে মাটির নিচে ‘মিসাইল শহর’ বানিয়েছে ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫৭ পিএম, ০৬ জুলাই ২০২০

অডিও শুনুন

শত্রুপক্ষকে রাতের ঘুম হারাম করে দেয়ার দুঃসংবাদ শোনাল ইরান। দেশটি দাবি করেছে, তারা ইতোমধ্যে একাধিক ভূগর্ভস্থ মিসাইল শহর তৈরি করে ফলেছে। এমনকি ক্ষেপণাস্ত্র-সমৃদ্ধ এই শহর পারস্য উপসাগরের তীর থেকেও খানিকটা গভীরে বিস্তৃত। এই শহরগুলোতে একাধিক বাঙ্কার ও ভাসমান প্ল্যাটফর্মও রয়েছে।

তেহরানভিত্তিক সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন সুবহে সাদিককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেছেন ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) নৌবাহিনী প্রধান রিয়াল অ্যাডমিরাল আলী রেজা তানসিরি। খবর রাশিয়াভিত্তিক টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আরটির

সাক্ষাৎকারটি গতকাল রোববার প্রকাশিত হয়েছে। সাক্ষাৎকারে তানসিরি বলেন, ‌ইরান ভূগর্ভস্থ মিসাইল শহর তৈরি করেছে যা পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরের তীর থেকেও বেশ গভীরে বিস্তৃত। এটা ইরানের শত্রুদের জন্য দুঃস্বপ্নের কারণ হবে বলে হুঁশিয়ারি করে দেন তিনি।

‘আইআরজিসি এখন এই দুই উপসাগরের সর্বত্র বিচরণ করছে। ইরানের নৌবাহিনীর ২৩ হাজার সদস্য ও ৪২৮টির মতো জাহাজ দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তসহ এখানকার সব জায়গায় গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে’, যোগ করেন তানসিরি।

ইরানের এই নৌবাহিনী প্রধান আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘খুব শিগগিরই এই মিসাইল শহরে এমন অনেক মিসাইল যোগ হবে যা শত্রুপক্ষেরও ধারণার বাইরে। এগুলো হবে অত্যন্ত আধুনিক ও শত্রুপক্ষের অনেক গভীরে আঘাত হানতে সক্ষম।’

আরটির প্রতিবেদন বলছে, এ পর্যন্ত একাধিক ভূগর্ভস্থ মিসাইল ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলেছে ইরান এবং এগুলো খুবই গোপনীয় জায়গায় অবস্থিত। অত্যন্ত সুরক্ষিত একাধিক কারখানায় এসব মিসাইল ও যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করছে দেশটি। তবে এসব স্থাপনার এখনও পর্যন্ত কোনো ছবি প্রকাশ করেনি দেশটির এলিট বাহিনী।

পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণের গতি বাড়ানো ছাড়াও ইরান এখন পারস্য উপসাগর এবং আরব উপদ্বীপে কৌশলগত যুদ্ধ শুরু করেছে। গতবছর ইরান এই অঞ্চল থেকে বেশ কয়েকটি বিদেশি তেলবাহী জাহাজকে জব্দ করেছে। তারা হরমুজ প্রণালিতে নজরদারি করা একটি মার্কিন সামরিক ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তেল ও অন্যান্য পণ্যবাহী জাহাজের অন্যতম প্রধান এই যাত্রাপথের আশপাশে সম্প্রতি কয়েকটি কয়েকটি দুর্ঘটনাজনিত জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। যদিও এসব ঘটনার জন্য বরাবরই ইরানকে দায়ী করে আসছে বৈরী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য, তারপরও এসব ঘটনার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে ইরান।

গতবছর থেকেই বিদেশি সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি বেড়েছে পারস্য উপসাগরে। ফলে সেখানে স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা রয়েছে। ভোগোলিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথে বর্তমানে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে দেশটির ভাষ্য, সেখানে নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিত করতে চায় ওয়াশিংটন।

পারস্য উপসাগর ওমান উপসাগরের একটি বর্ধিত অংশ। বর্তমান ইরান ও আরব উপদ্বীপের মধ্যে এর অবস্থান। ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, পারস্য উপসাগরের নিজেদের অংশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সক্ষমতা তাদের রয়েছে। তাই সেখান থেকে বিদেশিদের সরে যেতে আহ্বান জানিয়ে আসছে দেশটি।

এসআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।