মন্ত্রণালয়ের ভুল সিদ্ধান্তে ফেঁসে গেল চারশ’ ডেন্টাল শিক্ষার্থী


প্রকাশিত: ০৩:১৬ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৫
ফাইল ছবি

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভুল সিদ্ধান্তে ফেঁসে গেল চারশ’ ডেন্টাল শিক্ষার্থী। বিভিন্ন বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে অধ্যয়নরত এ সকল শিক্ষার্থী আগামী বছরের শুরুতে তাদের প্রথম পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। প্রথম পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পূর্বশত হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক হলেও আবেদন করেও রেজিস্ট্রেশন পাচ্ছেন না তারা।

নেপথ্যের কারণ জানা গেছে, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তির জন্য  ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ পাস নম্বর বেঁধে দিলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে তারা ৩০ নম্বর পেয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।

এর ফলে লাখ লাখ টাকা খরচ করে ভর্তি হয়ে এ সব শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।  রেজিস্ট্রেশন পেতে এখন তারা কখনও ডেন্টাল কলেজ কর্তৃৃপক্ষ, কখনও স্বাস্থ্য অধিদফতর, মন্ত্রণালয় আবার কখনও বা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু সমাধান মিলছেনা।

উদ্ভুত এ সমস্যা থেকে উত্তরণে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এর প্রো-ভিসি অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন মিয়া, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম. ইকবাল আর্সলান, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক ডা. আবু শফি আহমেদ আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ডা. ইসমাইল খান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. আবদুর রশীদ, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) সভাপতি ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন ও বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ডেন্টাল কলেজের নেতারা ঢাবি ভিসিকে জানান, পাস নম্বর ৪০ করার কারণে গতবছর ডেন্টাল কলেজের মোট ১৩শ’ আসন শূন্য ছিল। প্রথম পর্যায়ে মাত্র ১৩০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। ডেন্টাল কলেজ মালিকদের বার বার অনুরোধ ও বাস্তবতা বিবেচনায় মন্ত্রণালয় বিশেষ বিবেচনায় ৩০ নম্বরে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দেয়। পরবর্তীতে ৩০ নম্বরে  ৪শ’ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্য জাগো নিউজকে জানান, বৈঠকে অংশগ্রহণকারী  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সরাসরি কোন প্রকার মন্তব্য বা মতামত না দিয়ে একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মেডিসিন ফ্যাকাল্টিসহ মোট ১৩টি ফ্যাকাল্টি/ইনস্টিটিউট পরিচালিত হয়। এগুলো কিভাবে চলবে সে সম্পর্কে একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সদস্যরা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল সর্বসন্মতিক্রমে তাদের অধীনে পরিচালিত সকল ফ্যাকাল্টিতে ১০০  নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০ নির্ধারণ করে। সুতরাং নিয়মানুযায়ী ৩০ নম্বর প্রাপ্তরা রেজিস্ট্রেশন পাবেনা এটাই স্বাভাবিক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠক উপস্থিত একাধিক সদস্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ বিবেচনায় পাস নম্বর ৪০ থেকে কমিয়ে ৩০ করা উচিত হয়নি।

এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী নয় মন্ত্রণালয়ের উপর দায় বর্তায় বলে তারা মন্তব্য করে বলেন, একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আবেদন সাপেক্ষে একাডেমিক ও সিন্ডিকেট সভায় হয়তো বিশেষ বিবেচনায়) শেষ পর্যন্ত  ৪শ’ শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন পেলেও পেতে পারেন।

এমইউ/এসএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।