ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মিডফোর্ডের সেই চিকিৎসক বরখাস্ত


প্রকাশিত: ০২:৪০ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৫

নারী সহকর্মীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে অবশেষে বরখাস্ত হলেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের নেফ্রোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাসুদ ইকবাল। রোববার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা শাখা-১ ওই চিকিৎসককে চাকরি থেকে তিন মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হলো মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
 
মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম ও উপ-সচিব আসমা তাসকিন স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপন সকল সরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বরাবর অনুলিপিও পাঠিয়ে ডা. মাসুদ ইকবালকে বরখাস্তের বার্তা জানানো হয়।
 
এ ব্যাপারে রোববার বিকেলে ডা. মাসুদ ইকবাল জাগো নিউজকে বলেন, আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে- এ ধরনের সংবাদ আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। এ বিষয়ে কোনো ধরনের লিখিত চিঠি কিংবা বার্তা তিনি পাননি। তাই এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
 
কিডনি বিশেষজ্ঞকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ২০১৪ সালের মে মাসে তার বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। তখন ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসক এবং অভিযুক্ত ডা. মাসুদ ইকবাল দুইজনেই জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে কর্মরত ছিলেন।

JU
 
তদন্ত শেষে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৪ সালের ৬ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় সংশ্লিষ্ট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাজাহান মণ্ডল।
 
নারী এবং শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সালাউদ্দিন আহমেদ অভিযোগপত্র গ্রহণ করে শুনানি শেষে বিচারক ডা. মাসুদ ইকবালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
 
কিন্তু পুলিশের অভিযোগপত্র, আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গ্রহণ এবং অভিযোগ গঠন সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে শাস্তির আওতার বাহিরে ছিলেন তিনি। বরং একটি বিভাগের প্রধান করে রাখা হয়েছিল তাকে।
 
অভিযোগ ওঠে, প্রভাবশালী মহলের অব্যাহত চাপের কারণে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সহকর্মীকে অফিস চলাকালীন সময়ে ধর্ষণ চেষ্টার মতো গুরুতর ঘটনায় অভিযুক্ত ডা. মাসুদ ইকবালের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছিল না।
 
তবে আদালত অভিযোগ গঠনের পরও মাসুদকে সাময়িক বরখাস্ত না করায় মামলার বাদী মামলা ক্ষতিগ্রস্ত ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় বিচার প্রার্থনা করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বরাবর আবেদন করেন ওই নারী চিকিৎসক।
 
সর্বশেষ গত ১৯ অক্টোবর হাইকোর্টের দায়েরকৃত ১০৬৪৪/২০১৫রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ডা. মাসুদ ইকবালকে তিন মাসের জন্য বরখাস্তের নির্দেশ দেন।
 
রোববার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা শাখা-১ থেকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বি.এস.আর পার্ট-১ এর ৭৩ নং বিধির নোট-২ এবং সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ১৯ অক্টোবরের রায়ের আলোকে ডা. মাসুদ ইকবালকে (৩৯২৪৯) সহযোগী অধ্যাপক (নেফ্রোলজি বিভাগ), স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা ১৯ অক্টোবরে থেকে আগামী ৩ (তিন) মাসের জন্য সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। তবে বরখাস্তকালীন তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।’

জেইউ/এসএইচএস/এআরএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।