খুলনায় মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচনে ভুয়া ভোটার!


প্রকাশিত: ০৯:২২ এএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৫

চিকিৎসক, কাপড় ব্যবসায়ী, হোটেল কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশার একাধিক ব্যক্তির নাম রয়েছে আসন্ন খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের প্রকাশিত ভোটার তালিকায়। প্রকাশিত ভোটার তালিকা থেকে ভুয়া ভোটার বাদ না দিলে নির্বাচন হবে প্রশ্নবিদ্ধ এমন অভিযোগ করেছেন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীসহ সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থী।

এ বিষয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। অন্যদিকে, সদ্য বিদায়ী পরিষদের শীর্ষ নেতারা দাবি করেছেন, তালিকায় কোন ভুয়া ভোটার নেই।

সাধারণ সভায় সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো মামলা না হলেও এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন উপলক্ষে গত বুধবার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ভোটার তালিকায় ভোটারের সংখ্যা আট হাজার ৬২৮ জন। বৃহস্পতিবার খসড়া ভোটার তালিকার উপর আপত্তি গ্রহণ করা হয়।

সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীসহ একাধিক প্রার্থী প্রকাশিত ভোটার তালিকায় ভুয়া ভোটারের ছড়াছড়ি এমন অভিযোগ এনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে একাধিক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় তিন হাজারের অধিক ভুয়া ভোটার রয়েছে। পৃথক পৃথক অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষরকারীরা হলেন, সভাপতি প্রার্থী মো. নাদির উদ্দিন খান ও এমএ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কাজী মো. নুরুল ইসলাম বেবী, মনোয়ার হোসেন মনা ও ইলিয়াস হোসেন হোসেলসহ বিভিন্ন পদের একাধিক প্রার্থী।

সম্ভাব্য প্রার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন কার্যালয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সামনে অভিযোগকারীরা অভিযোগের পক্ষে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত উপাস্থাপন করেন। এ প্রসঙ্গে সদ্য বিদায়ী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য গ্রহণ করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।

একাধিক প্রার্থী অভিযোগ করে জাগো নিউজকে জানান, প্রকাশিত  ভোটার তালিকায় প্রচুর ভুয়া ভোটার রয়েছে। চিকিৎসক, কাপড় ব্যবসায়ী, ইজিবাইক চালক, এমনকি হোটেলের কর্মচারীর নাম রয়েছে এই  ভোটার তালিকায়। ভোটার তালিকায় একই নাম একাধিকবার এসেছে। তালিকা থেকে এসব ভুয়া ভোটার বাদ দেয়া এবং ইউনিয়নের বিপুল সংখ্যক প্রবীণ সদস্য যারা সময়ের অভাবে কার্ড নবায়ন করতে পারেননি তাদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দাবি জানানো হয়। অন্যথায় প্রকাশিত ভোটার তালিকায় নির্বাচন হলে তা হবে প্রশ্নবিদ্ধ।

প্রার্থীরা জানান, গত বছর ২০১৪ সালের নবায়নকৃত প্রায় ২৫শ সদস্য চলতি বছরের জন্য তাদের কার্ড নবায়ন করতে পারেননি। এসব সদস্যদের অধিকাংশই দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত রয়েছেন। ছুটি না পাওয়ায় এবং নবায়নের সময় কম থাকায় তারা নির্ধারিত সময়ে কার্ড নবায়ন করতে পারেননি বলে ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এছাড়া খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ইউনিট কার্যালয় রয়েছে। এসব কার্যালয়ে প্রচুর ভোটার রয়েছে।

ঘোষিত নির্বাচনী তফসীল অনুযায়ী ২৮ অক্টোবর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। আর ভোট গ্রহণ ৬ নভেম্বর। মাত্র সাত দিন সময়ে নতুন প্রার্থীরা প্রতীকসহ তাদের প্রচার সামগ্রী নিয়ে ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে পারবেন না। এজন্য ন্যূনতম ১৫ দিন সময় রেখে তফসিল ঘোষণা করা উচিত ছিল।

এ ব্যাপারে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মোড়ল আনিসুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, খসড়া ভোটার তালিকার উপর অভিযোগকারী এবং সদ্য বিদায়ী কমিটির বক্তব্য গ্রহণ করা হয়েছে। উভয় পক্ষের তথ্য যাচাই-বাচাই এবং ভুয়া ভোটার সনাক্তকরণের কাজ চলছে।

তিনি বলেন, সাংসদ মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন পরিচালনা কমিটি একটি স্বচ্ছ, পরিচ্ছন্ন, সুষ্ঠু ও সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি কোনো আপোষ করবে না।

সদ্য বিদায়ী কমিটির কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে ইউনিয়নের গঠনতন্ত্রে পরিষ্কার করে বলা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে শ্রম দফতরের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

আলমগীর হান্নান/এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।