যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরা নিষিদ্ধ হচ্ছে
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরা নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। এছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে যখন-তখন পুলিশি হস্তক্ষেপের বিষয়টিও নিষিদ্ধ হচ্ছে।
এ দুটি বিষয়সহ পুলিশ বিভাগে বেশকিছু সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বড় শহর মিনিয়াপলিস সিটি কাউন্সিল। এসব সিদ্ধান্ত ক্যালিফোর্নিয়াতেও নেয়া হচ্ছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার এক জরুরি বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্তগুলো পাস হয়েছে। তবে এগুলো কার্যকর হতে একজন বিচারকের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
পাস হওয়া সংস্কার প্রস্তাবে আরও রয়েছে, জনসমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে টিয়ার গ্যাসসহ অন্য অস্ত্র ব্যবহারের জন্য মিনিয়াপলিস পুলিশ প্রধানের অনুমতি নিতে হবে।
পুলিশের নথি বিশ্লেষণ করে এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৪৪ বার মানুষের গলা চেপে ধরে অজ্ঞান করা হয়েছে। অনেক পুলিশ বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এই সংখ্যা আরও বেশি হবে।
মিনিয়াপলিসের মেয়র জ্যাকব ফ্রে কাউন্সিল এক বিবৃতিতে বলেছেন, জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এটিই যথেষ্ট নয়। এর জন্য প্রয়োজন নির্বাচিত নেতাদের জবাবদিহিতা থেকে শুরু করে কাঠামোগত সংস্কার।
গত ২৫ মে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপলিসে পুলিশি হেফাজতে হত্যার শিকার হন নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড। একজন প্রত্যক্ষদর্শীর ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, হাঁটু দিয়ে নিরস্ত্র ফ্লয়েডের গলা চেপে ধরে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন ডেরেক চাওভিন নামের এক পুলিশ অফিসার।
জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে টানা ১১ দিন ধরে বিক্ষোভে উত্তাল রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া বিভিন্ন দেশেও এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।
নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার ফ্লয়েডের পরিবার তার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনার কথা বললেও সরকার পক্ষের কৌসুলিরা বলছেন, তারা এখনো এ নিয়ে প্রমাণ সংগ্রহের কাজ করছেন। ওই চার পুলিশ সদস্যকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ফ্লয়েডের নির্মম এই হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে মৃত্যুর ঘটনার উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান সামনে এনেছে। মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে গোটা যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে ১ হাজার ১৪ জন মারা গেছে।
বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, দেশটিতে পুলিশের গুলিতে নিহতদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশিরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ। ‘ম্যাপিং পুলিশ ভায়োলেন্স’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থার চালানো জরিপে দাবি করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় তিনগুণ বেশি মারা যায় কৃষ্ণাঙ্গরা।
এমএসএইচ