আনারস নয়, বারুদ ভর্তি নারিকেল খেয়েই প্রাণ যায় সেই হাতির
ভারতের কেরালা রাজ্যের পালাক্কড় জেলায় এক গর্ভবতী হাতির মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। বারুদভর্তি আনারস খাইয়ে হাতিটিকে হত্যার কথা এতদিন শোনা গেলেও তদন্তে এখন জানা গেছে যে, বারুদভর্তি আনারস নয় ওই হাতি বারুদভর্তি নারিকেল খেয়ে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে।
স্থানীয় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সুনীল কুমার ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভিকে বলেন, ‘এই মামলায় প্রথম আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কর্মকর্তারা প্রমাণ সংগ্রহের অংশ হিসেবে ওই ব্যক্তিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। আরও দুজনকে ওই বিস্ফোরক তৈরিতে সহায়তাকারী ওই ব্যক্তি এই তথ্য জানিয়েছেন।’
কেরালার ওই হাতির মৃত্যু নিয়ে গোটা ভারতে ব্যাপক তোলপাড় হয়। তারপর এ নিয়ে একটি মামলা করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এরপর ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উইলসন নামের ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি গ্রেফতার হন। তিনি একজন রবার চাষী। এছাড়া এ মামলায় অপর দুই সন্দেহভাজন পলাতক।
স্থানীয়ভাবে তৈরি বিস্ফোরকগুলো ফলের মধ্যে বা পশুর চর্বিতে ভরে দেন স্থানীয়রা, যা বুনো প্রাণীকে ভয় দেখানোর জন্য এবং ফসল রক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়। কর্মকর্তারা বলছেন, নারিকেলটি ভেঙে বিস্ফোরক পদার্থসহ একটি অংশ খেয়েই প্রাণ হারায় পেটে বাচ্চা থাকা ওই হাতিটি।
বিস্ফোরক ভর্তি নারিকেল খেলে হাতিটির মুখ ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। ফলে কয়েকদিন পানি বা কোনো খাবার পর্যন্ত খেতে না পেরে দুর্বল হয়ে পড়ে। মুখের গুরুতর ক্ষত নিয়েই কয়েকদিন গ্রামে ঘোরার পর তীব্র যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে নদীতে শুঁড় ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। নদীতেই দাঁড়িয়ে মারা যায় হাতিটি।
হাতিটির শুকিয়ে যাওয়া চেহারা দেখে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের অনুমান, সম্ভবত মৃত্যুর ২০ দিন পূর্বে আঘাত পেয়েছিল হাতিটি এবং তখন থেকেই অনাহারে ছিল। সম্প্রতি হাতির মৃত্যুর ভিডিও বন কর্মকর্তারা পোস্ট শোকে আর ক্ষোভে ফেটে পড়ে ভারত। এ ঘটনায় শুধু ভারতে নয় বাংলাদেশিও সমালোচিত হয়।
তারপর গত বৃহস্পতিবার ‘ন্যায়বিচারের জয় হবে’ লিখে এক টুইট করে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়ন প্রতিশ্রুতি দেন মর্মান্তিক এ ঘটনার বিচার হবে। তার ঘোষণার পর মামলা হয় এবং এ নিয়ে তদন্ত শুরু করে কর্মকর্তারা। সেই তদন্ত এখনও চলছে।
এসএ