সৌদি-কাতার সঙ্কটের চার বছরেও কাটেনি অচলাবস্থা
ইরানকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের সঙ্গে তৈরি সৌদি নেতৃত্বাধীন কয়েকটি দেশের তিক্ত বিরোধের চার বছর পূর্ণ হতে চলেছে। দু'দিন পর মধ্যপ্রাচ্যের অচলাবস্থার পঞ্চম বর্ষে পদার্পন হতে চললেও এখনও এর কোনও সমাধান আসেনি।
২০১৭ সালের জুনে উপসাগরীয় মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইনের পাশাপাশি মিসরকে নিয়ে কাতারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব। জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদা এবং ইরান সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন ও অর্থায়নের অভিযোগ কাতারের সঙ্গে সব ধরনের ছিন্ন করে সৌদি নেতৃত্বাধীন কয়েকটি দেশ। যদিও কাতার বরাবরের মতো এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
মধ্যপ্রাচ্যের এই সঙ্কট নিরসনে প্রতিবেশি কুয়েতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত তা সফল হয়নি।
২০১৭ সালের ২৪ মে কাতারের সরকারি সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়। কাতারের আমিরের দেয়া এই বিবৃতিতে ইসলামি গোষ্ঠীগুলোর প্রতি দোহার সমর্থন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করা হয়।
কাতার জানায়, ওয়েবসাইটটি হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে এবং বিবৃতিটি ভুয়া। কিন্তু অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে এই বিবৃতি আঞ্চলিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়।
৫ জুন কাতারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেয় সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। সৌদির মিত্র অন্যান্য দেশগুলো কাতারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
এর একদিন পর টুইটারে ক্ষোভ ঝাড়েন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই সময় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি মিত্র দেশের সফরে গিয়ে ট্রাম্প কাতার মৌলবাদী মতাদর্শ সমর্থন করছে বলে আঞ্চলিক মিত্রদের সতর্ক করে দেয়ার দাবি জানান।
ওই বছরের জুনের শেষের দিকে দোহাভিত্তিক টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আল-জাজিরা বন্ধ এবং কাতারে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি প্রত্যাহারের বহিষ্কার-সহ ১৩ দফা শর্ত জুড়ে দিয়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রস্তাব দেয়। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরবের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে কাতারের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানানো হয়।
কাতার এসব দাবিকে অবাস্তব এবং অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যান করে। গত কয়েক দশকের মধ্যে নজিরবিহীন কূটনৈতিক সংকট শুরু হয় পুরো মধ্যপ্রাচ্যে।
সেই সময় মধ্যপ্রাচ্যের নজিরবিহীন এ সংকটে উদ্বেগ জানায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। কুয়েতসহ বেশ কয়েকটি দেশ মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক সংকট সমাধানে প্রচেষ্টা শুরু করলেও তা সফল হয়নি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে রিয়াদে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) সম্মেলনে অংশ নিতে কাতারের আমিরকে সৌদি বাদশাহ আমন্ত্রণ জানালেও তাতে সাড়া দেননি। পরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন নাসের বিন খলিফা আল-থানিকে রিয়াদে পাঠিয়ে দেয় কাতার।
সূত্র : এএফপি।
এসআইএস/এমআরএম