নগরে নতুন সুন্দরী হেলেন
ঢাকাই চলচ্চিত্রেরি শিল্পী সংকটের এই দিনে হরহামেশাই ঘটছে নতুন মুখের আগমন। কেউ টিকে থাকছেন, কেউ আবার হারিয়েও যাচ্ছেন ফাঁকা মাঠে আওয়াজ তুলে। কেউ এক ছবিতেই মাত করে দিচ্ছেন, কেউ চার-পাঁচের কোঠা পেরিয়েও সাফল্যের দেখা পাচ্ছেন না।
এই উত্থান-পতনের ইন্ডাস্ট্রিতে তবুও সম্ভাবনার বাজি ধরছেন নির্মাতা-প্রযোজকেরা। তবে হেলেনকে নিয়ে বাজিটা ধরেছেন অভিনেতা নিরব। না, এ ট্রয়ের রানী কিংবা কোনো রাজকন্যা নয়। এই হেলেন আমাদের প্রিয় চলচ্চিত্রাঙ্গনের নতুন প্রিয়মুখ। এই হেলেন রুপালি নগরের নতুন সুন্দরী।
পুরো নাম প্রীটি জয়েজ হেলেন। হেলেন নামেই তিনি পরিচিত সবখানে। দিন কয়েক আগেও নিজেকে তারকা ভাবতেন না তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই চিত্রনায়ক নিরবের হাত ধরে আলী আজাদের পরিচালনায় ‘দেশ আমাদের’ ছবিতে জুটি বদ্ধ হয়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন। গায়ে আঁচ করছেন তারকাখ্যাতির সুবাস।
যদিও চলচ্চিত্রে আগমনের পূর্বে হেলেন কাজ করেছেন প্রায় দেড় ডজন বিজ্ঞাপন চিত্রে। তবে সেগুলো ছিলো তার বড় পর্দায় আসার প্রস্তুতি হিসেবে। জাগো নিউজের সাথে আলাপকালে হেলেন বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমি ষোলটি টিভিসিতে কাজ করে করেছি। এরমধ্যে উল্লেখ্যযোগ হচ্ছে গ্রামীণফোন, ইস্পাহানি চা, অলিম্পিক টুইংকেল বিস্কুট, প্রাণ পিকেল, মোজো, সহজ ডট কম, আরএফএল ফ্রেসকো কনটেইনার, আরএফএল টিউবওয়েল ইত্যাদি।
শুধুই কি বিজ্ঞাপন? নাকি নাটকে কাজ করা হয়েছে? হেলেন বললেন, ‘হ্যাঁ, অনেকগুলো নাটকেও কাজ করেছি।’ তিনি জানালেন, তানিম রহমান অংশুর পরিচালনায় ব্ল্যাক হোল, ডেইলি ফ্রাইট নাইট, ক্লাশ’সহ বি ইউ শুভ’র পরিচালনায় সিরিয়াল ‘লাইন ইন অ্যা মেট্রো’, কায়সার আহমেদের পরিচালনায় ‘সহ যাত্রী’ নাটকগুলো উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও কাজ করেছেন লাইক এন্ড শেয়ার, নাইন এন্ড হাফ, জীবন চলার গল্প, খেলার পাগল নামের জনপ্রিয় নাটকগুলোতে।
চলচ্চিত্রে আসার গল্পটা জানতে চাওয়া মাত্রই হেলের মুখে যেনো খই ফুটতে শুরু হলো! গুলশান দুই নম্বরের অভিজাত রেঁস্তোরা স্টেক হাউজের গরম কফিতে চুমুক দিতে দিতে বললেন, ‘নিরব ভাইয়ার সাথে আমার পরিচয় হয় বেশ কিছুদিন আগে। তাও আবার ফেসবুকের মাধ্যমেই। আমি আগে থেকেই জানতাম নিরব ভাইয়ার হাত ধরেই এর আগে তিন জন চিত্রনায়িকা চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। আমিও মজা করেই একবার বলেছিলাম- ভাইয়া তুমি অন্যদের চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ দিয়েছো। আমাকেও তো দিতে পারো! আমি তো টুকটাক কাজ করছি শোবিজে। আর চলচ্চিত্র নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন। আমি নিজেকে ভালো মানের ছবিতে, মনে রাখার মতো কাজ করতে চাই। তারপর তিনি ব্যাপারটা সিরিয়াসভাবে নেন। পরে আমার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে-বুঝেই তিনি ‘দেশ আমাদের’ ছবির নির্মাতা আলী আজাদ আঙ্কেলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি আমার কিছু কাজ দেখে প্রশংসা করেন এবং আমাকে তার ছবিতে নিরব ভাইয়ার বিপরীতে সুযোগ দেন। এভাবেই শুরু স্বপ্ন পূরণের যাত্রার।’
হেলেন আরো বলেন, ‘প্রথমে তো আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি যে সত্যি ছবিতে কাজ করব। পরে যখন দেখলাম দেশের প্রায় সব কয়টি গণমাধ্যমে আমাদের ছবিটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলো তখন ওই ঘোরটা কেটে গেল। আমি এখন প্রস্তুতি নিচ্ছি নিজের প্রথম ছবিতে অভিনয়ের। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই ছবিটির কাজ শুরু হবে। আমি নিজের সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করবো ভালো অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মন জয় করতে।’
হেলেনের আগমনের নিউজ পেয়ে অনেক নির্মাতাই তাকে কাজের প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে হুট করে কিছু করতে চান না হেলেন। চলচ্চিত্রে নিজেকে ব্যস্ত করে তুলতে আরো সময় নিতে চান। আপাতত তিনি নিজের প্রথম ছবিটা নিয়েই ভাবছেন। কেননা, তিনি পূর্ণাঙ্গ মনযোগ দিয়ে নিজের অভিষেক হওয়া ছবিটাকে সফল করতে চান।
শোবিজের সম্ভাবনাময়ী এই তরুণ তুর্কী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, একজন শিল্পীকে সত্যিকার অর্থে শিল্প ধারণ করতে হলে শিক্ষার খুব প্রয়োজন। হেলেন তার স্বপ্নযাত্রায় সবার ভালোবাসা আর শুভকামনা প্রত্যাশি।
এলএ/আরআইপি