চীনের বিতর্কিত আইনের প্রতিবাদে হংকংয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ
হংকংয়ে সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রয়োগে চীনের বিতর্কিত পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে শহরটিতে। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে লকডাউন শুরুর পর সেখানে এটাই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ সমাবেশ। এদিন বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাস ও পিপার স্প্রে নিক্ষেপ করেছে হংকং পুলিশ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রোববার হংকংয়ের কজওয়ে বে-তে জড়ো হয়ে বেইজিংবিরোধী বিক্ষোভে সামিল হন কয়েক হাজার মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকেই ‘হংকং স্বাধীন করো’, ‘হংকংয়ের পাশে দাঁড়ান’, ‘হংকংয়ের স্বাধীনতাই একমাত্র পথ’, ‘স্বাধীনতার জন্য লড়াই’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এসময় ওই এলাকায় জলকামান ও সশস্ত্র যানবাহন নিয়ে পুলিশকে টহল দিতে দেখা যায়। তারা জনসাধারণকে গণজমায়েতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য না করতে সতর্ক করেন। পরে, ওয়ান চাই এলাকার বিক্ষোভকারীরা একটি সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেছেন দাবি করে তাদের ওপর টিয়ারগ্যাস ছোড়ে পুলিশ।
এদিন স্বাধীনতার দাবি করলেও বিক্ষোভকারীরা মূলত জড়ো হয়েছিলেন গত বৃহস্পতিবার চীনের প্রস্তাবিত নতুন নীতির বিরুদ্ধে। প্রস্তাবিত ওই নীতি কার্যকর হলে চীন সরকার হংকংয়ে সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ ও সেখানকার আইনপ্রণয়নকারী সংস্থা আইন পরিষদ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
এ প্রস্তাবের পরপরই ফুঁসে ওঠে হংকংবাসী। তাদের দাবি, এটি ১৯৯৭ সালের ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ চুক্তির লঙ্ঘন। এই চুক্তি অনুসারে সেসময় স্বায়ত্তশাসনের প্রতিশ্রুতিতে হংকংকে চীনের হাতে তুলে দিয়েছিল যুক্তরাজ্য। এর আগে ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এই বাণিজ্যকেন্দ্রটি।
এদিকে, শনিবার চীনের নতুন নীতির প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্বের অন্তত ২০০ রাজনীতিবিদ। এতে স্বাক্ষর করেছেন হংকংয়ে নিযুক্ত শেষ ব্রিটিশ গভর্নর ক্রিস প্যাটেনও।
তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই নীতি হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন, আইনের শাসন এবং মৌলিক স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আক্রামণ।’
তবে অন্যান্য দেশের এই অভিযোগকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। পাশাপাশি, প্রস্তাবিত নীতিটি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি করবে এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দিয়েছে জিনপিং প্রশাসন।
সূত্র: রয়টার্স
কেএএ/পিআর