১৪ ঘণ্টা নৌকা চালিয়ে গোটা শহরের খাবার পৌঁছাচ্ছেন সুপারশপ মালিক
করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় সামনে থেকে লড়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স, পুলিশ সদস্যরা। এর বাইরেও এমন কিছু মানুষ আছেন যারা অন্যের মুখে খাবার তুলে দিতে নিঃস্বার্থভাবেই করে যাচ্ছেন অমানুষিক পরিশ্রম। তেমনই একজন টোশুয়া পার্কার।
আলাস্কার প্রত্যন্ত এলাকার একটি ছোট্ট শহর গুস্তাভাস। সেখানে বসবাস করেন প্রায় ৪৫০ জনের মতো মানুষ। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিসিনপত্রের জন্য তাদের নির্ভর করতে হয় টোশুয়া পার্কারের সুপারশপ টসকো-র ওপর। পার্কারের সঙ্গে দোকানটিতে কাজ করেন আরও ১৪ জন কর্মচারী। দোকানের মালপত্রের জোগান আসে জুনো শহর থেকে।
করোনা মহামারির কারণে কর্মীদের কাজ আর মালপত্রের জোগান দু’টোই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পার্কারের সুপারশপে। ফলে গুস্তাভাস শহরের মানুষদের করোনাকে উপেক্ষা করে বাইরে বেরিয়েই জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে হতো। তবে শেষ পর্যন্ত তার দরকার হয়নি। এগিয়ে এসেছেন টোশুয়া পার্কার নিজেই।
বরফে ঢাকা আলাস্কার এই এলাকায় রাস্তাঘাট কিছু নেই। যোগাযোগের মাধ্যম হয় প্লেন নাহয় নৌকা। পার্কার আগে তার ছোট প্লেন নিয়ে সুপারশপের মালজিনিস আনতে যেতেন জুনো শহরে। সম্প্রতি সেটি শহরে ফেরার পথে তুষারঝড়ের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে পণ্য আনা-নেয়ার একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়ায় নৌকা।
নিজের শহরের মানুষদের জন্য পার্কারকে এখন প্রতি সপ্তাহে ১৪ ঘণ্টা নৌকা চালিয়ে জুনো শহর থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতে হচ্ছে। গত মার্চ থেকেই অবিরত এ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তিনি।
এ বিষয়ে টোশুয়া পার্কার বলেন, ‘এটা আমাদের কাছে বড় বিষয় নয়। কারণ এখনকার মানুষ বাঁচার জন্য বেশিরভাগ জিনিস নিজেরাই জোগাড় করে নেয়। আর যদি কোনও সমস্যা দেখা দেয়, আমরা তার জন্য অন্য কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকি না। নিজেরাই তা সমাধানের চেষ্টা করি। তাই এখন আমাদের যা করতে হচ্ছে, তাতে বেশ আনন্দই পাচ্ছি।’
সূত্র: সিএনএন, আনন্দবাজার পত্রিকা
কেএএ/