করোনা ছড়াচ্ছে মুসলিমরা, হিন্দুদের এমন দাবির পর পশ্চিমবঙ্গে দাঙ্গা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫২ পিএম, ১৩ মে ২০২০

করোনাভাইরাস পরীক্ষা এবং লোকজনকে কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের দোকান ও বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ছাড়াও বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। বিবিসির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

রোববার প্রথম উত্তেজনা তৈরি হলেও পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করার পরে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকেই নতুন করে আবার সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। গঙ্গা পাড়ের ওই এলাকায় বোমাবাজি আর আগুনের ধোঁয়া নদীর অপর প্রান্ত থেকেও দেখা গেছে।

স্থানীয় সূত্রের বরাতে বিবিসি বলছে, কয়েকদিন আগে করোনাভাইরাস পরীক্ষার একটি শিবির করা হয়েছিল তেলেনিপাড়া এলাকায়। পরীক্ষায় প্রথমে একজন আর তারপর আরও কয়েকজনের পজিটিভ হওয়ার রিপোর্ট আসে। ঘটনাচক্রে তারা সকলেই ছিলেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী।

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট এলাকার অধীন তেলেনিপাড়া এবং লাগোয়া ভদ্রেশ্বর আর চন্দননগরের উর্দিবাজার এলাকায় বুধবার নতুন করে সংঘর্ষ হয়নি, কিন্তু উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়। এখনও পর্যন্ত তিন দফায় মোট ১১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চন্দননগর পুলিশ কমিশনার হুমায়ূন কবীর।

west 2জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে দোকান ও ঘরবাড়ি

ওই অঞ্চলে চটকল আছে, আর সেখানে হিন্দু ও মুসলিমদের বসবাসের এলাকা মোটামুটিভাবে আলাদা। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘ক্যাম্পটা মুসলিম এলাকায় হওয়ায় সঙ্গত কারণে মুসলিমরা বেশি আক্রান্ত। কিন্তু হিন্দুদের একাংশ তা নিয়ে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াতে থাকে। মুসলিমরা করোনা ছড়াচ্ছে বলে টিটকিরি দেওয়া হয়।’

তবে গোটা ঘটনার আরেকটা বর্ণনাও পাওয়া গেছে হিন্দুত্ববাদীদের কাছ থেকে। তারা বলছেন, করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তিরা কোয়ারেন্টাইনে যেতে অস্বীকার করছিলেন বলেই হিন্দু প্রতিবেশিরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সংক্রমণ তাদের মধ্যেও ছড়াতে পারে এই আশঙ্কায়।

তাদের বক্তব্য, এ কারণেই ব্যারিকেড করে দেওয়া হয় ওই এলাকাটি। কিন্তু এলাকার মুসলিমরা জানায়, মুসলিমপ্রধান এলাকায় কেউ ব্যারিকেড তুলে বন্ধ করে দেওয়ার কারণে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। তারপর গত মঙ্গলবার দুপুরে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। ব্যাপক বোমাবাজি চলে, দোকান ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

যেসব ছবি নানা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, হিন্দু ও মুসলিম, উভয় পক্ষের মানুষের দোকান ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে বোমাবাজির ব্যাপারে একপক্ষ অপর পক্ষের ওপর দায় চাপাচ্ছেন।

বিশৃঙ্খলা ও অশান্তি ঠেকাতে ওই অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। বিজেপির স্থানীয় সংসদ সদস্য লকেট চ্যাটার্জির অভিযোগ, পুলিশ এই ঘটনায় নিষ্ক্রিয় ছিল।

এসএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।