আদালত প্রাঙ্গণে কামরুলকে জুতা নিক্ষেপ
শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামকে রোববার বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করার সময় উপস্থিত শত শত মানুষ জুতা প্রদর্শন করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতার কেউ কেউ কামরুলকে লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপও করেন।
এর আগে সকাল ৯ টায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কামরুলসহ অন্য আসামিদের কড়া নিরাপত্তায় আদালতপাড়ায় নিয়ে আসা হয়।
এদিকে রোববার দুপুর ১২টা থেকে রাজন হত্যা মামলার শেষ কার্যদিবসের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। আদালতে সাক্ষ্য দিচ্ছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদারসহ ৩ জন।
সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষে কামরুলসহ রাজন হত্যা মামলায় কারাগারে আটক ১১ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরা হলেন, শহরতলির কুমারগাঁওয়ের কামরুল ইসলামের ভাই মুহিদ আলম, আলী হায়দার, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল, ময়না চৌকিদার ওরফে বড় ময়না, রুহুল আমিন, দুলাল আহমদ, জালালাবাদ থানার পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে ভিডিওচিত্র ধারণকারী নুর মিয়া, ফিরোজ মিয়া, আছমত উল্লাহ ও আয়াজ আলী।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেল ২ টা ৫৭ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের ০৪০ উড়োজাহাজে করে পুলিশের তিন কর্মকর্তা কামরুলকে নিয়ে সৌদি আরব থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেরেন। কাস্টমস ও ইমেগ্রেশনের প্রক্রিয়া শেষ করে ওইদিন রাত সাড়ে ৯ টায় কড়া পুলিশি পাহারায় তাকে সিলেট আনা হয়। পরদিন শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে খুঁটিতে বেঁধে ১৩ বছরের শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যার পর সৌদি আরবে পালিয়ে যান কামরুল। রাজনকে নির্যাতনের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর সারাদেশে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
তখন প্রবাসীদের সহায়তায় কামরুলকে আটক করে সৌদি পুলিশের হাতে তুলে দেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এরপর কামরুলকে ফেরাতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ পুলিশ, জারি করা হয় রেড এলার্ট। ওই দিন শিশু রাজনকে পেটানোয় কামরুলই বেশি সক্রিয় ছিল বলে ওই ঘটনার ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়।
ঘটনার দেড় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে গত ১৬ আগস্ট ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে আলোচিত এই হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ।
কামরুলকে নিয়ে এই মামলার আসামিদের মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এ মামলায় পলাতক রয়েছে আরো দুই আসামি। এরা হচ্ছে কামরুলের ভাই সদর উপজেলার শেখপাড়ার বাসিন্দা শামীম আহমদ ও সুনামগঞ্জের পাভেল আহমদ।
ছামির মাহমুদ/এসএস/পিআর