করোনার জিনগত রূপান্তর ঘটেছে ২০০ বার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:২৭ পিএম, ০৭ মে ২০২০

অডিও শুনুন

চীনে উৎপত্তি হওয়ার পর নতুন করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে গত বছরের অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে। বিস্তার দ্রুত ঘটলেও শুরুতে কোনও দেশই বিষয়টি আঁচ করতে পারেনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাড়ে সাত হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে জিনগত বিশ্লেষণের পর যুক্তরাজ্যের একদল বিজ্ঞানী বুধবার এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জেনেটিকস ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা গবেষণায় নতুন করোনাভাইরাস সার্স-কোভ-২ উৎপত্তি হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ বার জিনগত রূপান্তর ঘটিয়েছে বলে দেখতে পেয়েছেন। পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাসটি কীভাবে মানবদেহে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে সেটিও গবেষকদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।

জিনগত বিশ্লেষণের পর বিজ্ঞানীদের ধারণা গত বছরের ৬ অক্টোবর থেকে ১১ ডিসেম্বরের কোনও এক সময়ে কোভিড-১৯ মহামারির শুরু হয়েছে। মানবদেহে ভাইরাসটি সংক্রমিত হওয়ার পর নমুনা পরীক্ষায় ওই সময়ের ইঙ্গিত মিলছে। ইনফেকশন, জেনেটিকস অ্যান্ড ইভ্যুলিউশন সাময়িকীতে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষক দলের সহকারী প্রধান ফ্রান্সিওস ব্যালোক্স বলেন, এই ভাইরাসটির রূপান্তর ঘটেছে অন্যান্য ভাইরাসের রূপান্তরের মতোই। কোভিড-১৯ ভাইরাসটির বৈশ্বিক জিনগত রূপান্তরের বড় একটি অংশ পাওয়া গেছে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নেয়া নমুনায় রূপান্তরে মিল পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর আগেই বিশ্বজুড়েই ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। যে কারণে আমরা সার্স-কোভ-২ মারাত্মক প্রাণঘাতী এবং সংক্রামক হয়ে উঠছে কিনা তা এখনই বলতে পারছি না।

ব্রিটিশ এই বিজ্ঞানী বলেন, সব ভাইরাসই রূপান্তরিত হয়। ভাইরাসের রূপান্তর খারাপ কিছু নয়। তবে সার্স-কোভ-২ প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত কিংবা ধীরে রূপান্তরিত হয়েছে কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না।

বুধবার করোনাভাইরাস নিয়ে ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগোর বিজ্ঞানীদের অপর একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এতে আগের এক গবেষণায় করোনাভাইরাস পৃথক দুটি ধরণে রূপ নিয়েছে বলে যে দাবি করা হয়েছিল সেটি সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

গত মার্চ মাসে চীনের একদল বিজ্ঞানী নতুন করোনাভাইরাসের দুটি প্রজাতি সংক্রমণ ঘটাচ্ছে বলে তাদের গবেষণায় জানান। আর এই দুই প্রজাতি অন্য করোনাভাইরাসের চেয়ে বেশি আগ্রাসী বলে দাবি করেন চীনা বিজ্ঞানীরা। কিন্তু ইনফেকশন, জেনেটিকস অ্যান্ড ইভ্যুলিউশন সাময়িকীতে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলেছেন, সেই সময়ও কেবলমাত্র এক ধরনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছিল।

রয়টার্সের পরিসংখ্যান বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রাণঘাতী এই ভাইরাস বিশ্বের ৩৭ লাখের বেশি মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটিয়েছে এবং মারা গেছেন ২ লাখ ৫৮ হাজারের বেশি।

এসআইএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।