বছর শেষে বাজারে আসবে জার্মান-মার্কিন করোনা ভ্যাকসিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৫৯ এএম, ০৬ মে ২০২০

অডিও শুনুন

করোনার সম্ভাব্য একটি ভ্যাকসিন যৌথভাবে তৈরি করছে জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বায়োটেক কোম্পানি। জার্মানিতে তা মানবদেহে প্রয়োগ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে মানবদেহে পুশ করা হবে আগামী সপ্তাহে। জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেক জানিয়েছে, এই বছরের শেষে ভ্যাকসিনটি বাজারে আসবে।

জার্মান ফার্মাসিটিউকাল কোম্পানি বায়োএনটেক ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অপর কোম্পানি ফাইজার সম্ভাব্য ওই ভ্যাকসিন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই যৌথভাবে তাদের গবেষণা চালাচ্ছে। বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনার সম্ভাব্য যে ৮টি ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে তার মধ্যে এটি অন্যতম।

জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেক এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) উগুর সাহিন মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএএনকে আজ বলেছেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষে অনুমোদন পেলে ২০২০ সালের শেষ দিকে ভ্যাকসিনটির কয়েক লাখ ডোজ উৎপাদন করতে পারবে তারা।

ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট কোনো মহামারি থেকে রক্ষায় ১৮ মাসের মধ্যে ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়ার চল বিশ্বে থাকলেও বৈশ্বিক এই মহামারির কারণে ঐতিহাসিক দ্রুততার সঙ্গে আরও অনেক কম সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন বায়োএনটেক সিইও উগুর সাহিন।

তিনি বলেন, ‘যেকোনো মহামারি পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনের (প্রতিষেধক টিকা) উপকারিতা অপরিসীম। তাই বর্তমান এই মহামারি পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনের অনুমোদন অতীতে চলে আসা পদ্ধতির চেয়ে আরও ভিন্নভাবে হতে পারে। আমাদের ভিন্নপথে হাঁটতে হবে।’

বায়োএনটেক সিইও তাদের তৈরি এই ভ্যাকসিনের সম্ভাবনা নিয়ে বলেন ‘এই ভ্যাকসিন যে কাজ করছে আমরা তা দেখতে পাচ্ছি। এমনকি কম মাত্রায় প্রয়োগ করেও এই ভ্যাকসিন শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। বিভিন্ন প্রাণীর দেহে আমরা এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেছি। তা বেশ কার্যকরীও হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, মানুষের ক্ষেত্রেও এই ভ্যাকসিন একইরকমভাবে কাজ করবে।’

বায়োএনটেক বুধবার এক বিবৃতি দিয়ে জানায়, গত ২৩ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত জার্মানিতে ১২ জন স্বেচ্ছাসেবীর দেহে বিএনটি১৬২ নামের এই সম্ভাব্য ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেছে। পরবর্তী ধাপে আরও ২০০ স্বেচ্ছাসেবীর দেহে তা প্রয়োগ করবে; যাদের বয়স হবে ১৮ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে।

যুক্তরাষ্ট্রে মানবদেহে প্রয়োগের জন্য দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ার পর সম্ভাব্য ওই ভ্যাকসিনের মার্কিন অংশীদারি কোম্পানি ফাইজার জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে তারা ভ্যাকসিনটি মানবদেহে প্রয়োগ করবে। আগামী শরৎ এর মধ্যে যা জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে।

মহামারি নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধে বিশ্বজুড়ে ১০৮টি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন (প্রতিষেধক) তৈরির কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলছে, বিশ্বজুড়ে সম্ভাব্য এই ১০৮টি ভ্যাকসিনের মধ্যে ৮টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অর্থাৎ মানবদেহে প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে।

গত ১৬ মার্চ প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগ করে দ্য আমেরিকান ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউট বা এনআইএস। এরপর আরও ৭টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা বায়োটেক কোম্পানি তাদের তৈরি কোভিড-১৯ এর সম্ভ্যাব্য ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগ করার অনুমতি পায়।

ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অর্থাৎ মানবদেহে প্রয়োগের জন্য অনুমোদন পাওয়া ৮টি ভ্যাকসিনের মধ্যে ৫টি তৈরি করেছে চীন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে একটি করে ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে। অপরটি যৌথভাবে তৈরির কাজ করছে জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেকে ও যুক্তরাষ্ট্রের বায়োটেক কোম্পানি ফাইজার।

প্রসঙ্গত, কোভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধে কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক এখনো তৈরি হয়নি। গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা বিদ্যমান ওষুধ প্রয়োগ করে করোনা রোগীদের সুস্থ করা যায় কিনা তা নিয়েও গবেষণা করছেন। সেসবের মধ্যে ইবোলার ওষুধ রেমডেসিভির জরুরি প্রয়োজনে কোভিড-১৯ রোগীদের প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এসএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।